তিন ছাত্রকে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দিল ছাত্রলীগ
কবি নজরুল সরকারি কলেজের তিন শিক্ষার্থীকে মারধর করে শহীদ শামসুল আলম হল থেকে বের করে দিয়েছে ছাত্রলীগের তিন কর্মী। বুধবার (২১শে ডিসেম্বর ) দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মারধরকারীরা হলেন, কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী রাকিব, মিলন ও ফিদবী।
অভিযুক্ত তিনজন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার অনুসারী এবং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। আহতরা হলেন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কাউসার, ইমরান ও অর্থনীতি বিভাগের মো. জালাল। তাদেরকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
কাউসার বলেন, সকালে আমি ঘুমাচ্ছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের তিন কর্মী এসে আমাকে বলে ক্যাম্পাসে কর্মসূচি আছে যেতে হবে। তাদেরকে বললাম, আমি অসুস্থ। দুপুরে আবার আমার রুমে এসে জানতে চাইলো ক্যাম্পাসে গিয়েছি কিনা? আমি না বলার সাথে সাথে আমাকে থাপ্পড় মেরে ফেলে দিয়েছে। পরে আমাকে রাকিব, মিলন, ও ফিদবী কিল, ঘুষি লাথি মারতে থাকে। আমি এখন ডান কানে কিছু শুনতে পাচ্ছি না। আমাকে গত মাসের ১২ তারিখেও মিলন মারধর করেছে।
২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম বলেন, আমি তাদের অনেক সিনিয়র। অথচ তারা আমার সাথে খুবই অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। আমি সহ আরো কয়েকজনকে হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে। না বের হলে মারধর করে বের করে দেওয়ার কথাও বলেন তারা। আজ ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে না যাওয়ায় হলের তিন ছোট ভাইকে বেধড়ক মারধর করেছে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতির অনুসারীরা।
আরো পড়ুন: ফেসবুক লাইভে ছাত্রলীগ নেতার নাম না বলায় সাংবাদিককে মারধর, থানায় মামলা
মারধরের বিষয়ে ছাত্রলীগের তিন কর্মীর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি কলেজ ক্যাম্পাসে দেখা করতে বলেন।
এ বিষয়ে শহীদ শামসুল আলম হলের সুপারভাইজার প্রভাষক মো. কামরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের একমাত্র ব্যতিক্রম হল কবি নজরুল কলেজের এই হল। এটি পুরোটাই ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে। এখানে কে উঠে আর কে নামে কলেজ প্রশাসন কিছুই জানে না। সবকিছু ছাত্ররা নিয়ন্ত্রণ করে। এখন কলেজের শিক্ষার্থীদের কেউ যদি কলেজ প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানায়, তাহলে সেটা কলেজ প্রশাসন দেখবে।