০২ ডিসেম্বর ২০২২, ২১:৩৬

ঢাবিতে নারীকে টেনেহিঁচড়ে নেওয়ার ঘটনাটি ‘হত্যাকাণ্ড’: পুলিশ

  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় প্রাইভেটকারের চাকায় পেঁচিয়ে টেনেহিঁচড়ে দীর্ঘ পথ টেনে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এক নারী নিহত হয়েছেন। আর ওই ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহতের দেবর নুরুল আমিন আহত হন। এটা সড়ক দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহীদুল্লাহ।

আজ শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ।

ডিসি মো. শহীদুল্লাহ বলেন, বিকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের পাশে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধি স্থলের উল্টোপাশের রাস্তায় রুবিনা আক্তার নামে এক নারীকে বহন করা মোটরসাইকেলের পেছনে ধাক্কা দেয় একটি প্রাইভেটকার। এতে তিনি মোটরসাইকেল থেকে রাস্তায় পড়ে গেলে প্রাইভেটকারের নিচে আটকে যান। পরে প্রাইভেটকার-চালক ঢাবির সাবেক আন্তর্জাতিক বিভাগের সাবেক সহকারী অধ্যাপক এমডি আজাহার জাফর শাহ গাড়ি না থামিয়ে বেপরোয়া গতিতে টিএসসি চত্বর হয়ে নীলক্ষেতের দিকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যান।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাইভেটকারের চাকায় ওই নারী আটকে যাবার পর পথচারীরা চালককে গাড়ি থামাতে বললেও তিনি থামাননি। আরও  গতিতে গাড়ি চালাতে থাকেন প্রাইভেটকার-চালক। পরে টিএসসি চত্বরে শাহবাগ থানার মোবাইল টিম ও শিক্ষার্থীরা গতিরোধ করার চেষ্টা করলেও থামাতে পারেনি। পুলিশ, শিক্ষার্থী ও পথচারীদের ডাক-চিৎকারে নীলক্ষেত এলাকায় সামনে থেকে প্রাইভেটকারের গতিরোধ করে জনতা।

তিনি জানান, গাড়ির নিচ থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এসময় উত্তেজিত জনতা ক্ষৃপ্ত হয়ে ঢাবির সাবেক শিক্ষক আজাহার জাফর শাহকে বেধড়ক মারপিট করে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তিনি বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার গাড়িটিও জব্দ করা হয়েছে।

ওই প্রাইভেটকার-চালক নেশাগ্রস্ত ছিলেন কিনা জানতে চাইলে ডিসি শহীদুল্লাহ বলেন, ‘আমি থানায় আসছিলাম তার (চালক) সঙ্গে কথা বলতে। কিন্তু তিনি আহতবস্থায়  হাসপাতালে ভর্তি। সুস্থ হলে জানা যাবে‌। এছাড়া চিকিৎসক তার বিষয়ে বলতে পারবেন। তবে এটি দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড। সাবেক শিক্ষক স্বাভাবিক ছিলেন কিনা, তা তদন্তের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে চালক ও গাড়ি জব্দ আছে। ভুক্তভোগীর পরিবারের কেউ অভিযোগ করলে তাদের পূর্ণ আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হবে বলে জানান ডিসি শহীদুল্লাহ।

ডিসি বলেন, ওই ঘটনার পর শিক্ষককের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি বিষয়টি শোনার করে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে, ফোনটি বন্ধ করে দেন। পরে আর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে শিক্ষককে সিটি স্কান করা হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তেজগাঁওয়ের তেজকুনিপাড়ার মৃত মাহবুবর রহমান খান ডলারের স্ত্রী রুবিনা আক্তার। তিনি এক ছেলের জননী। ছেলের নাম রোহান, সে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বিকালে তেজগাঁও থেকে দেবরের সঙ্গে হাজারীবাগে বাবার বাসায় যাচ্ছিলেন ওই নারী।