৩০ ছাত্রকে সমকামিতায় বাধ্য করেন শিক্ষক
ছেলে শিক্ষার্থীদের সমকামিতায় বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকার ধামরাইয়ে ভালুম আতাউর রহমান খান ডিগ্রি কলেজের ভূগোল বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষকের যৌন নির্যাতনের শিকার প্রায় ৩০ শিক্ষার্থী অবশেষে মুখ খুলেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন ।
শিক্ষার্থীদের সমকামিতায় বাধ্য করতেন এই শিক্ষক। রাজি না হলে শিক্ষার্থীদের মারধর ও পরীক্ষায় কম নম্বর পাইয়ে দেয়ার ভীতি প্রদর্শন করতেন। আবার শিক্ষার্থীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কূরুচিপূর্ণ আলাপচারিতা ও মেসেঞ্জারে নগ্নছবি চাইতেন ওই শিক্ষক।
আরও পড়ুন: ৪১তম বিসিএসের ফল হতে পারে আগামী সপ্তাহে
এঘটনায় গত ৩ অক্টোবর তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। কিন্তু এক মাস অতিবাহিত হলেও অদৃশ্য কারণে কলেজ কর্তৃপক্ষ কার্যত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থায়ী কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তবে শিগগির ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানানো হয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ।
জানা গেছে, যৌন ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজটির গভর্নিং বডির সভাপতি হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পেয়ে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বক্তব্য গ্রহণ শেষে ৩ অক্টোবর কলেজের আরেক প্রভাষক তদন্ত কমিটির প্রধান হাবিবুর রহমান হাবিব প্রতিবেদন জমা দেন। তবে প্রতিবেদন জমা দেয়ার এক মাস অতিবাহিত হলেও অদৃশ্য কারণে অভিযুক্ত প্রভাষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানান, ওই স্যার শিক্ষার্থীদের হয়রানি করে। মেয়েদের করে না, শুধু ছেলেদের। পড়ালেখার কথা চিন্তা কইরা কেউ মুখ খোলেনি। আর আমরা যারা অভিযোগ করছি তারা পড়ালেখার কথা চিন্তা করে করিনি। কারণ আমরা কলেজ শেষ করার পর সেখান থেকে চলে আসলেতো আবার ওই শিক্ষক আমাদের ছোট ভাইদের সাথেও একই কাজ করবে। এই কথা চিন্তা করেই আমরা অভিযোগ দিছি। প্রায় এক মাস আগে আমরা অভিযোগ দিছি। কিন্তু এখনও কোন বিচার হয় নাই।
তদন্ত কমিটির প্রধান ভালুম আতাউর রহমান খান ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, তদন্তে যা পেয়েছি সেটাতো ভাষায় প্রকাশ করা করা যায় না। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সাথে সাক্ষাতে কথা বলে ১৫-২০ দিন আগে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। ওই প্রভাষকের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি।
অভিযুক্ত ভালুম আতাউর রহমান খান ডিগ্রি কলেজের ভূগোল বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক আমিনুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। এমএমএস করেও কোন সাড়া মেলেনি। পরবর্তীতে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ধামরাইয়ে ভালুম আতাউর রহমান খান ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাইন উদ্দিন জানান, সেই স্যার আর কলেজে আসে না। ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ করছে। সেই এটার সিদ্ধান্ত নেবে। আমার কাছেতো অভিযোগ নাই। ইউএনও স্যারতো ব্যবস্থা নেবেই। এক সপ্তাহের মধ্যে এটার সিদ্ধান্ত দেবে।
এবিষয়ে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কলেজটির গভর্নিং বডির সভাপতি হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এটি প্রক্রিয়াধীন আছে। শীঘ্রই আপনারা ফলাফল জানতে পারবেন।