২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮:৪৩

৮ বিয়ে, বহু প্রতারণা: কোটিপতি নীলা এবার জেলে

সুলতানা পারভীন নীলা  © সংগৃহীত

বিয়ের নামে ফাঁদে ফেলে একাধিক পুরুষকে নিঃস্ব করা খুলনার বহুল আলোচিত সুলতানা পারভীন নীলা ওরফে বৃষ্টিকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। বিয়ে করেছেন আটটি। প্রতারণা করেছেন সব স্বামীর সঙ্গেই। লুটে নিয়েছেন তাদের সর্বস্ব। তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে মামলা, হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগও রয়েছে।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নীলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার আগে ঢাকার ১৪ নম্বর আদালতে হাজির হয়ে প্রতারণার মামলায় জামিন আবেদন আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মাইনুল হোসেন তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অপর এক আসামি তার বড় ভাই শফিকুল আলম বিপ্লবের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর নীলার বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

নীলার সাবেক (৭ নম্বর) স্বামী এম রহমানের দায়ের করা মামলার আইনজীবী ঢাকা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট ওয়াদুদ শাহীন এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন। 
 
ঢাকার সিআইডি উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম জানান, নীলা খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার সুলতানুল আলম বাদলের মেয়ে। তিনি বহু বিবাহে আসক্ত। প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ৮ জনকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। পক্ষান্তরে তার বিয়ের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

নীলার সপ্তম স্বামী এম রহমান তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার দায়িত্ব পায় ঢাকার সিআইডি। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট মামলার চার আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করেন আদালত।

আরও পড়ুন: অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ঠাঁই যাত্রীছাউনিতে

সিআইডি’র এ এস আই বলেন, নীলা যে বাসার ঠিকানা ব্যবহার করে আসছেন সেটি সঠিক নয়। একেক সময় তিনি একেক পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করতেন। নতুন স্বামীর সহায়-সম্পত্তি হাতিয় আরেকজনকে টার্গেট করতেন। একই নিয়মে তিনি বাকি বিয়েগুলো করেছেন।

নীলার সাবেক স্বামীদের ভাষ্য, শারীরিক গঠন ও রূপ-যৌবনকে পুঁজি করে তিনি প্রতারণা করতেন। বিয়ের নামে ধনাঢ্য ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, চাকরিজীবীদের ফাঁদে ফেলে কোটিপতি বনে গেছেন নীলা। যাদের সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে কথা কাটাকাটি হতো তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন-যৌতুক দাবি সংক্রান্ত একাধিক মামলা করতেন খুলনার আলোচিত এ নারী। সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে সম্পর্কের সূত্র ধরে চেক চুরি করে অপর এক নারীর ব্যাংক হিসাব থেকে ১০ লাখ টাকা উত্তোলনের ঘটনায় মামলা হয়।

একাধিক অভিযোগ ও অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, সুলতানা পারভীন নীলা বিয়ের পরপরই তার স্বামীদের কাছ থেকে দেনমোহরের টাকাসহ নানা কৌশলে বাড়ি-গাড়ি হাতিয়ে নিতেন। পরে তালাক নিতেন। এটি মূলত তার ব্যবসা।