২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪:০১

অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের ভরাডুবি, চাকরি হারানোর আশঙ্কায় ম্যাককালাম

ইংল্যান্ডের প্রধান কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম  © সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অ্যাশেজ সিরিজে চরম ব্যর্থতার পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন ইংল্যান্ডের প্রধান কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। মাঠের লড়াইয়ে অসহায় আত্মসমর্পণ আর কৌশলগত ভুলের দায়ে এখন তার কোচের পদ নিয়েই টানাটানি শুরু হয়েছে। প্রথম তিন টেস্টের সবকটিতেই হেরে ১১ দিনের মধ্যে সিরিজ হাতছাড়া করেছে ইংলিশরা, যা অ্যাশেজ ইতিহাসে দ্রুততম সিরিজ নিষ্পত্তির মাত্র দ্বিতীয় ঘটনা।

ব্রিসবেনে প্রথম টেস্ট দুই দিনে, সিডনিতে দ্বিতীয় টেস্ট চার দিনে এবং অ্যাডিলেড ওভালে তৃতীয় টেস্টে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে হেরে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ খোয়ায় ইংল্যান্ড। এই বিপর্যয়ের পর ম্যাককালাম নিজেও দায় এড়াতে পারছেন না। নিজের ভুল স্বীকার করে তিনি বলেন, 'পেছন ফিরে তাকালে বোঝা যায়, আমরা ৩-০ ব্যবধানে হেরেছি। নিশ্চয়ই সেখানে পরিবর্তনের সুযোগ ছিল। কোচ হিসেবে বলতে হয়, আমি হয়তো সবকিছু ঠিকভাবে করতে পারিনি।' 

পরিসংখ্যান বলছে, অস্ট্রেলিয়ায় ইংল্যান্ডের জয় এখন সোনার হরিণ। ২০১০-১১ মৌসুমের পর সেখানে খেলা ১৮টি টেস্টের মধ্যে ১৬টিতেই হেরেছে তারা।

ম্যাককালাম ও স্টোকসের আক্রমণাত্মক ‘বাজবল’ ক্রিকেট গত কয়েক বছরে ব্যাপক প্রশংসিত হলেও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। সাবেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার জিওফ্রে বয়কট কড়া ভাষায় তার কলামে লিখেছেন, 'ম্যাককালাম ও স্টোকস ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন ঠিকই, কিন্তু বাজবলের মেয়াদ শেষ। যদি কোনো পরিকল্পনা কাজ না করে, তবে বদল আনতেই হবে। কোচ পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি।'

আরেক সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন মনে করেন, ম্যাককালাম ও বোর্ড কর্মকর্তারা বর্তমানে প্রবল চাপের মুখে আছেন। সাবেক পেসার স্টিভ হারমিসন সরাসরিই বলে দিয়েছেন, তিনি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় ম্যাককালামকে আর রাখতে চান না।

ইংল্যান্ড ক্রিকেটের ইতিহাস বলছে, অ্যাশেজে এমন ভরাডুবির পর কোচের চাকরি টেকানো দায় হয়ে পড়ে। ২০১৩-১৪ মৌসুমে হোয়াইটওয়াশের পর অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার এবং ২০২১-২২ মৌসুমে ৪-০ হারের পর ক্রিস সিলভারউডকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। ম্যাককালামের ক্ষেত্রেও সেই একই পরিণতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে এর মধ্যেও আশার আলো দেখছেন কেউ কেউ। ধারাভাষ্যকার জনাথন অ্যাগনিউ মনে করেন, ভুলগুলো সঠিকভাবে পর্যালোচনা করতে পারলে এই স্টোকস-ম্যাককালাম জুটির ওপর আরও একবার আস্থা রাখা যেতে পারে।

সিরিজ হারলেও ইংল্যান্ডের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্ট। প্যাট কামিন্স ও নাথান লায়নকে ছাড়াই হয়তো মাঠে নামবে অস্ট্রেলিয়া। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কি ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? নাকি এই সিরিজ হার ইংল্যান্ড ক্রিকেটে বড় কোনো পরিবর্তনের সূচনা করবে, তা এখন সময়ের অপেক্ষা।