২০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৯

শততম টেস্টে শতক হাঁকিয়ে ইতিহাসের পাতায় মুশফিক

মুশফিকুর রহিম   © সৌজন্যে প্রাপ্ত

ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছিলেন মুশফিকুর রহিম, ছিলেন অপরাজিত ৯৯ রানে। মাত্র একটি রান, আর তাতেই সৃষ্টি হতো এক অনন্য অধ্যায়। সেই এক রানের অপেক্ষায় যেন দীর্ঘতর হয়ে উঠেছিল রাতটি। শঙ্কা, প্রত্যাশা, উত্তেজনা—সব মিলিয়ে ঠিকই অস্থির ছিলেন টাইগার ভক্তরাও। কিন্তু যাকে ঘিরে এত আলোচনা, সেই মুশফিক মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিনের সকালে ছিলেন সম্পূর্ণ শান্ত, স্থির, সংযত।

হামফ্রিসের করা দিনের প্রথম ওভারটি সতর্কতার সঙ্গে সামলে নেন তিনি। কোনো রান নেননি, আবেগের ঢেউও বাড়াননি। কিন্তু পরের ওভারেই পেসার জর্ডান নিলের তৃতীয় বলে সুচিন্তিত এক রান নিয়ে ছুঁয়ে ফেলেন কাঙ্ক্ষিত সেই মাইলফলক। এতেই খুলে গেল ইতিহাসের নতুন দরজা।

ভাগ্যের কলমে লেখা পড়ে গেল তার নাম। ১৯৫তম বল, ব্যাটে কি দারুণ এক প্রতিক্রিয়া, আর ২৫৭ মিনিটের ধৈর্যের ফসল! সবমিলিয়ে পারলেনই মুশি। ইতিহাসের ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে, আর বাংলাদেশের হয়ে প্রথম, শততম টেস্টে শতরান করে রাখলেন নিজেকে এক এলিট অধ্যায়ে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এ যেন সত্যিই স্বর্ণাক্ষরে লেখা এক নাম—মুশফিকুর রহিম।

১৪৮ বছরের দীর্ঘ টেস্ট ইতিহাসে শততম ম্যাচে শতরান করেছেন মাত্র ১০ জন—কলিন ক্রাউড্রে, জাভেদ মিয়াদাঁদ, গর্ডন গ্রিনিজ, অ্যালেক স্টুয়ার্ট, রিকি পন্টিং, ইনজামাম-উল-হক, জো রুট, গ্রায়েম স্মিথ, হাশিম আমলা এবং ডেভিড ওয়ার্নার। আজ সেই তালিকায় যুক্ত হলো আরেকটি নাম, সেটাও আবার একজন বাঙালির।

ভক্তদের প্রতীক্ষাও ছিল প্রবল—মুশফিক কি পারবেন এই ‘এলিট’ ক্লাবে প্রবেশ করতে? শের-ই-বাংলায় পাঁচ নম্বরে নেমে ব্যাট করতে করতে মুশফিক বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি এসেছেন লক্ষ্য পূরণ করতেই। শট, টেম্পারামেন্ট, নিষ্ঠা—সবকিছুই বলছিল, এই ইনিংস অসম্পূর্ণ রেখে সাজঘরে ফিরবেন না তিনি। 

প্রথম দিনের শেষে মাত্র এক রান দূরত্বে ছিলেন শতকের। কিন্তু দ্বিতীয় দিনের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তিন অঙ্কের সেই অপেক্ষা শেষ হলো। সবমিলিয়ে মুশফিকুর রহিম—বাঙালির গর্ব, বাঙালির স্বপ্ন, আর এখন বাঙালির ইতিহাসের এক অনন্য মাইলফলক!