বিশ্বকাপ জিতে কাঁদলেন, জানতেন না মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন পরিবারের সদস্য
ভারতীয় নারী ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ শিরোপা উচ্ছ্বাসের পেছনে লুকিয়ে এক মর্মস্পর্শী কাহিনি। নাভি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতে ইতিহাস গড়েছে হারমানপ্রীত কৌরের দল। কিন্তু এই মহোৎসবের অন্তরালে এক পরিবারের অদৃশ্য বেদনা, যা জানত না কেউ। এমনকি দলের অন্যতম অলরাউন্ডার অমনজোত কৌর নিজেও না।
অমনজোত যখন মাঠের লড়াইয়ে ব্যস্ত, তখন তার পরিবারে ভিন্ন আবহ। বিশ্বকাপ চলাকালীন হার্ট অ্যাটাক করেন তার দাদি ভগতী দেবী। কিন্তু প্রিয় নাতনির মনোবল যেন ভেঙে না যায়, এই আশঙ্কায় পরিবারের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেন, এই দুঃসংবাদ যেন অমনজোতের মনোবল নষ্ট না করে; তাই চেপে রাখা হয় খবরটি।
এ প্রসঙ্গে অমনজোতের বাবা ভূপিন্দর সিং দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘আমার মা ভগতী দেবী ছোটবেলা থেকেই অমনজোতের সবচেয়ে বড় সমর্থক। আমি যখন আমার কাঠের দোকানে কাজ করতাম, তখন মা বসে থাকতেন মাঠে বা পার্কে, যেখানে মেয়েটা ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলত। গত মাসে মা হার্ট অ্যাটাক করেন, কিন্তু আমরা অমনজোতকে কিছু জানাইনি। হাসপাতালেই দিন কাটিয়েছি। এখন ভারতের বিশ্বকাপ জয় যেন আমাদের সব কষ্টের ওষুধ।’
ফাইনালে ভাগ্য নির্ধারণী দিনে দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক লরা ভলভার্ট, শতরান পেরিয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন জয়ের স্বপ্নে। ঠিক তখনই ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেন অমনজোত কৌর। ভলভার্টের (১০১) আকাশছোঁয়া শটটি নিখুঁতভাবে তালুবন্দি করে ভারতের পক্ষে ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি নিতে সহায়তা করেন অমনজোত। সেই ক্যাচেই বদলে যায় খেলার গতিপথ, আর ধীরে ধীরে নিশ্চিত হয় ভারতের স্বপ্নজয়।
ম্যাচ শেষে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অমনজোত বলেন, ‘ওই ক্যাচটা জীবনের সবচেয়ে বড় মুহূর্ত ছিল। দ্বিতীয় সুযোগটা কাজে লাগাতে পেরে খুশি। আমরা ইতিহাস গড়েছি—এটা কেবল শুরু, ভারতীয় নারী ক্রিকেট আরও অনেক দূর যাবে।’