সহজ ম্যাচ কঠিন করে হেরে সিরিজও হাতছাড়া বাংলাদেশের
শেষ ওভারে ২১ রানের প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। তবে স্পিনার আকিল হোসেনের বিরুদ্ধে কোনো বাউন্ডারি বের করতে পারেনি স্বাগতিকরা। উল্টো রিশাদ আর নাসুমের উইকেট হারায় লাল-সবুজেরা। শেষমেশ ম্যাচে হারের ব্যবধান দাঁড়ায় ১৪ রান।
এ হারের সঙ্গে সিরিজও হেরে গেছে লিটন দাসের দল। প্রথম টি–টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশ ১৬ রানে হেরেছিল। এর ফলে শুক্রবারের তৃতীয় ও শেষ টি–টোয়েন্টি এখন কেবল আনুষ্ঠানিকতা হয়ে দাঁড়াল। বুধবার (২৯ অক্টোবর) চট্টগ্রামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রানের সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ১৩৫ রানে থামে বাংলাদেশ দল।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে সাবধানী শুরু পেয়েছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও সাইফ হাসান। এর মধ্যেই একবার জীবন পান সাইফ। জেসন হোল্ডারের করা দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে ক্যাচ তুলেছিলেন, কিন্তু পয়েন্ট থেকে পেছনে দৌড়ে বলের নিচে ঠিকভাবে পৌঁছাতে পারেননি ব্র্যান্ডন কিং। অবশ্য জীবন পেয়েও বেশিদূর যেতে পারেননি সাইফ; হোল্ডারের পরের স্পেলে তিনিই ফেরান এই ওপেনারকে, ক্যাচ নেন ব্র্যান্ডন কিং। ৫ রান করে ফেরেন সাইফ।
সাইফের বিদায়ে শুরুর ধাক্কা সামলে নেন তামিম-লিটন জুটি। পরে অবশ্য রোমারিও শেফার্ডের ভালো লেন্থের বলটি লাইন ছেড়ে খেলতে গিয়ে টপ-এজ করেন লিটন দাস। সহজ সুযোগটি পেয়েছিলেন মিড-উইকেটের কাছে থাকা শেরফানে রাদারফোর্ড, সময়ও ছিল হাতে যথেষ্ট, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্যাচটি হাতছাড়া করেন তিনি।
জীবন পেয়ে লিটন বেশিদূর যেতে পারেননি, আকিল হোসেনের ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ১৭ বলে ২৩ রান করে ফেরেন। তাওহীদ হৃদয়ও আজ ব্যাট হাতে ব্যর্থ। রোমারিও শেফার্ডের বলে জেইডেন সিলসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তিনি। ১৪ বলে ১২ রান এসেছিল তার ব্যাটে। ইনিংসের ১৫তম ওভারে দলীয় ১০০ রানে পৌঁছায় বাংলাদেশ। তার আগেই ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূর্ণ করেন তানজিদ তামিম। রোমারিও শেফার্ডকে কাভার দিয়ে চারের মার মেরে ৩৮ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। তার টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের নবম অর্ধশতক এটি।
অবশ্য, ফিফটি ছুঁয়ে বেশিক্ষণ উইকেটে থিতু হতে পারেননি তামিম। ৪৮ বলে ৬১ রান করে ফেরেন এই ওপেনার। বাকিরা সেভাবে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেননি। বরং আসা-যাওয়ার মিছিলেই ব্যস্ত ছিলেন। এতে শেষমেশ ১৪ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় সফরকারীরা। শুরুতে ব্রেন্ডন কিংকে (১) তুলে নেন তাসকিন আহমেদ।
আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন কোনোভাবেই সম্ভব নয়: নাহিদ ইসলাম
শামীম হোসেনের বল ড্রাইভ করে ডিপ এক্সট্রা কাভারে ঠেলে এক রান নিয়ে ৩০ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন শাই হোপ। পরের ওভারেই বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন নাসুম আহমেদ। তার ঘূর্ণিতে তানজিদ তামিমের হাতে ক্যাচ দেন আথানেজ, ৩৩ বলে ৫২ রান করে বিদায় নেন। পরের বলেই নাসুম বোল্ড করে শেরফানে রাদারফোর্ডকে ফেরান। এতে মাত্র দুই বলের ব্যবধানে দুই উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
একপ্রান্ত ধরে লড়াই করছিলেন শাই হোপ, তবে হাফ সেঞ্চুরির পর তাকে আর সেট হতে দেননি মোস্তাফিজ। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে শামীম হোসেনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ৫৫ রান করে ফেরেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক। এরপর রভম্যান পাওয়েলও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। রিশাদ হোসেনের ঘূর্ণিতে মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। পাওয়েল ফেরেন ৯ বলে ৩ রান করে। মাত্র দুই বল পরই ফের আঘাত হানেন রিশাদ, তাওহীদ হৃদয়ের হাতে ৪ বলে ৪ রান করা ক্যাচ দেন জেসন হোল্ডার।
ইনিংসের শেষ ওভার করতে এসে প্রথম বলেই সাফল্য পান মোস্তাফিজ। তার শর্ট বলটি ডিপ পয়েন্টে পাঠিয়ে জাকের আলীর হাতে ক্যাচ দেন রোমারিও শেফার্ড, ফেরেন ১৬ বলে ১৩ রান করে। পরের বলেই বোল্ড করে খারি পিয়েরকে ফেরান দ্য ফিজ। অবশ্য নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও শেষমেশ লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছিল সফরকারীরা।