২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৫৭

রেকর্ড গড়ে ১৯ মাস পর ওয়ানডে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ

উইকেট উদযাপন বাংলাদেশের  © সংগৃহীত

আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কার পর ফের আফগানদের সঙ্গে সিরিজ হেরে প্রায় ১৯ মাস ওয়ানডে সিরিজে জয়বঞ্চিত ছিল বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে ২০ বছর পর টানা পঞ্চম সিরিজ পরাজয়ের শঙ্কাও জেগেছিল। তবে শেষমেষ তেমন কিছুই হয়নি। ঘরের মাঠে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ১৭৯ রানের বড় জয়ে প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখল স্বাগতিকরা। হোম অব ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় এটি বাংলাদেশের। এর আগে, ২০১৮ সালে ১৬৩ রানের ব্যবধানে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছিল লাল-সবুজেরা।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯৬ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। জবাবে ১১৭ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারীরা। এই জয়ে দীর্ঘ ১৯ মাস পর ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।

বড় লক্ষ্য তাড়ায় সাবধানি শুরুই করেছিল সফরকারীরা। তবে পঞ্চম ওভারে অ্যালিক অ্যাথানেজকে এলবিডব্লু করে প্রথম সাফল্য এনে দেন নাসুম। এরপর সপ্তম ওভারে রিভিউ নিয়ে ফের আকিম অগাস্তকে এলবিডব্লু করম। বাঁহাতি এই স্পিনারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২৮ রানে দুই উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

টানা তৃতীয় ওভারেও সাফল্য নাসুমের। নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে ব্রেন্ডন কিংকে বোল্ড করে দলকে তৃতীয় উইকেট এনে দেন তিনি।

উইকেট শিকারে নাসুমের সঙ্গে যোগ দেন আরেক বাঁহাতি স্পিনার তানভীর। ১৪তম ওভারের প্রথম বলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক শাই হোপকে ফেরান তিনি। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে শান্তর হাতে ধরা পড়েন ১৬ বলে ৪ রান করা হোপ।

দলীয় ৬৫ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় সফরকারীরা। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে শেরফান রাদারফোর্ডকে মিরাজের ক্যাচ বানান রিশাদ। ফেরার আগে ১৬ বলে ১২ রান করেন এই ব্যাটার।

তিন বল পরই আরও এক আঘাত রিশাদের। তার ফুল টসে নাসুমের হাতে ক্যাচ তুলে দেন চেজ। কোনো রান না করেই সাজঘরে ফেরেন তিনি।

এরপর ২২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কিসি কার্টিকে কাভারে শান্তর ক্যাচে পরিণত করেন তানভীর ইসলাম। ৪৩ বলে ১৫ রানের মন্থর এক ইনিংস খেলেন টপ-অর্ডার এই ব্যাটার।

লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মোতিও (১২ বলে ৭)। রিশাদের ঘূর্ণিতে লেগবিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন। জাস্টিন গ্রিভসকে (৩৩ বলে ১৫) উইকেটকিপার সোহানের ক্যাচ বানিয়ে বাংলাদেশকে নবম উইকেট এনে দেন মিরাজ। শেষদিকে কেবল ব্যবধান কমান পিয়েরে ও আকিল।

এর আগে, স্পিনারদের জন্য ভালো উইকেট বিবেচিত হলেও দুর্দান্ত শুরু পেয়েছিলেন টাইগার দুই ওপেনার। মাত্র ৪৬ বলে ৫০ রান তুলে নেয় উদ্বোধনী জুটি। অবশ্য, খ্যারি পিয়েরের এলবিডব্লিউ আবেদন নিয়ে সাইফ হাসান রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান।

দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দশম ওভারে পেসার জাস্টিন গ্রেভসের ওভারে ৪৮ বলেই ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করেন সৌম্য, ওয়ানডেতে তার ১৪তম ফিফটি এটি।সাইফও ৪৪ বলে প্রথম ফিফটি তুলে নেন।

কিন্তু ২৬তম ওভারে সাইফ ৮০ রানে লং অনে গ্রিভসের হাতে ধরা পড়েন, ৭২ বলের ইনিংসে ৬ ছক্কা ছিল তার। সৌম্য সরকারও ৯১ রান করে আউট হন, ৮৬ বল খেলেন ৪ ছক্কা মেরে।

এরপর টানছিলেন হৃদয় ও শান্ত। তবে অ্যালিক অ্যাথানেজকে স্লগ সুইপ করে ছক্কা মারতে চাইলেও টাইমিংয়ের ভুলে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন হৃদয়। ৪৪ বলে ২৮ রান করেন এই ব্যাটার।

ইনিংসের ৪৩তম ওভারের পঞ্চম বলে ক্যাচ তুলেন শান্ত, কিন্তু সহজ সেই ক্যাচ নিতে পারেননি মোতি। তবে তিন বল পরই সাবেক টাইগার অধিনায়ক বিদায় নেন, নিজের বলেই মিড অফের দিকে দৌড়ে গিয়ে অসাধারণ ক্যাচ করেন অ্যালিক অ্যাথানেজ। ৫৫ বল খেলে ৩ ছক্কায় ৪৪ রান করে ফেরেন শান্ত।

ইনিংসের ৪৬তম ওভারে পরপর তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম বলেই মাহিদুল অঙ্কনকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে পঞ্চম উইকেট হারাতে বাধ্য করেন আকিল। ১০ বল ৬ রানে ফেরেন অঙ্কন।

তিন বলের মধ্যে রিশাদকেও ফেরান আকিল। ছক্কা মারার চেষ্টায় পিয়েরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রিশাদ, ৬ বল খেলে মাত্র ৩ রান করেন। ওভারের শেষ বলে অগাস্তের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন নাসুমও। এতে মাত্র ২ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন আকিল। সেখান থেকে দলীয় স্কোর তিন শ'র কাছাকাছি নিয়ে যান মিরাজ ও সোহান।