১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২২

বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ে ভারতকে হারাল অস্ট্রেলিয়া

বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ে ভারতকে হারাল অস্ট্রেলিয়া  © সংগৃহীত

বিশ্বকাপের ম্যাচটি শুরু হয়েছিল ভারতীয়দের উচ্ছ্বাস ও আশার আলোয়, কিন্তু শেষটা হলো অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস রচনার মধ্য দিয়ে। বিশাখাপত্তনমে রোববার এক রোমাঞ্চকর ও নাটকীয় লড়াইয়ে নারী ক্রিকেটে নতুন অধ্যায় লিখলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি। তার বিধ্বংসী ১৪২ রানের ইনিংসে ৩৩১ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করে ভারতকে তিন উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া—যা নারী ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার নতুন রেকর্ড।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত সূচনা পায় ভারত। ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা ও প্রতীকা রাওয়ালের ১৫৫ রানের জুটি ভারতকে এনে দেয় শক্ত ভিত। মান্ধানার ঝড়ো ৮০ রানের ইনিংসে আসে ৫০০০ রান পূরণের মাইলফলক—সবচেয়ে কম ইনিংসে এই রেকর্ড গড়া প্রথম ভারতীয় ব্যাটার তিনি। অপরপ্রান্তে প্রতীকা রাওয়ালের ধীরস্থির ৭৫ রান ভারতকে পৌঁছে দেয় সম্ভাবনাময় ৩৩০ রানের টোটালে, যা বেশিরভাগ সময়েই জয়ের নিশ্চয়তা হিসেবে ধরা হতো।

তবে এদিন সব আলো কাড়লেন হিলি। উইকেটকিপার ব্যাটার এই দিনটিকে রূপ দিলেন নিজের ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্তে। মাত্র ১০৭ বলে ২১টি চার ও ৩টি ছক্কার ঝড়ে ছিন্নভিন্ন করলেন ভারতীয় বোলিং আক্রমণকে। এক পর্যায়ে ক্রান্তি গৌড়ের এক ওভারে চার বলে চারটি বাউন্ডারি হাঁকান—একটি ছক্কা, তিনটি চার। প্রতিটি বলের দিক, প্রতিটি ফাঁকা জায়গা যেন তার আগেই মেপে রাখা ছিল।

মাত্র ৩৫ বলে তুলে নেন ফিফটি—যা এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরি। এরপর আশলি গার্ডনারের সঙ্গে গড়ে তোলেন গুরুত্বপূর্ণ ৯৫ রানের জুটি, যা ম্যাচের গতিপথই বদলে দেয়। ইনিংসের একপর্যায়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেও পরে ফিরে এসে এলিস পেরির অপরাজিত ৪৭ রানের সঙ্গে জুটিতে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন হিলি।

ভারতের বোলারদের মধ্যে একমাত্র লড়াই করে যান শ্রী চরনী। ১০ ওভারে মাত্র ৪১ রান খরচায় তুলে নেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট—যার মধ্যে ছিল ফিবি লিচফিল্ড ও অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডের মতো ব্যাটারদের শিকার। তবে হিলির আগুনঝরা ইনিংসের সামনে তার সেই সাফল্যও ম্লান হয়ে যায়।

অস্ট্রেলিয়া এদিন ভেঙে দেয় নারী ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান তাড়ার আগের রেকর্ড—২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার ৩০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়। এই জয়ে তারা উঠে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে, আর ভারত নেমে গেছে তৃতীয় স্থানে।