২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:৩০

ক্যাচ মিসে ও নিস্পৃহ ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের কাছে হারলো বাংলাদেশ

বাংলাদেশকে হারিয়ে ফাইনালে পাকিস্তান  © সংগৃহীত

এশিয়া কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ছিল মাত্র ১৩৬ রান। দেখলে মনে হতেই পারে, টি-টোয়েন্টির প্রেক্ষাপটে খুব একটা কঠিন লক্ষ্য নয়। তবে নিস্পৃহ ব্যাটিং ও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ মিসের কারণে সেই সহজ লক্ষ্যও স্পর্শ করতে ব্যর্থ হলো লাল-সবুজের দল।

স্বল্প পুঁজিতেই দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর পাকিস্তান ফিল্ডিংয়েও ছিল গোছানো ও আগ্রাসী। বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাটাররা ছিলেন খেইহারা, আত্মবিশ্বাসহীন। একের পর এক উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দল। বড় কোনো জুটি না গড়ায় ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে নিতে পারেনি টাইগাররা।

১৩৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বারবারই ব্যর্থ হয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ম্যাচ জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল স্থিরতা, ব্যাট-বলের নিয়ন্ত্রিত প্রদর্শন এবং ফিল্ডিংয়ে মনোযোগ। কিন্তু কোনো বিভাগেই সে প্রতিচ্ছবি দেখা যায়নি।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুবাইতে অঘোষিত সেমিফাইনালে বাংলাদেশকে ১১ রানে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করল সালমান আলীর দল। জয়ের পথ ছেড়ে এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিতে হলো বাংলাদেশকে। আর লো-স্কোরিং ম্যাচে দারুণ লড়াই করে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করল পাকিস্তান। এ জয়ে ফাইনালে খেলবেন ভারত পাকিস্তান।

এর আগে, দুবাইয়ে টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে তুলেছে মাত্র ১৩৫ রান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন মোহাম্মদ হারিস। বাংলাদেশ দলের পেসার তাসকিন আহমেদ ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইনিংসের সেরা বোলার হিসেবে নজর কাড়েন।

এক ম্যাচ পর একাদশে ফিরে ইনিংসের শুরুতেই বল হাতে নেন তাসকিন। মাত্র চার বলেই দলকে এনে দেন প্রথম ব্রেকথ্রু। অফ স্টাম্পের বাইরে গুড লেংথে করা চতুর্থ বলটি স্কয়ার ড্রাইভ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে রিশাদ হোসেনের হাতে ধরা পড়েন সাহিবজাদা ফারহান। মাত্র ৪ রান করে ফেরেন তিনি।

এরপর পরের ওভারেই অধিনায়ক জাকের আলি স্পিন আক্রমণে আনেন শেখ মেহেদীকে। আস্থার প্রতিদান দিতে দেরি করেননি মেহেদী হাসান। তৃতীয় বলেই সাইম আইয়ুবকে মিড অনে ক্যাচ বানান, ফিল্ডার ছিলেন সেই রিশাদ হোসেনই। কোনো রান না করেই ফেরেন আইয়ুব।

মাত্র ৫ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। সেই চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন ফখর জামান ও অধিনায়ক সালমান আলি আগা। তবে পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২৭ রান তুলতেই খেলা শেষ হয় ফখরের। সপ্তম ওভারে রিশাদ হোসেনের অফ-মিডল স্টাম্প লাইনের বল লং অফে তুললে ক্যাচ দেন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ২১ বলে ১৩ রান।

রিশাদ থেমে থাকেননি। নিজের পরের ওভারে ফেরান হুসেইন তালাতকে। তিনি করেন মাত্র ৩ রান। অন্যপ্রান্তে থাকা সালমান আলি আগাও থিতু হতে পারেননি। ২৩ বল খেলে করেন ১৯ রান।

৪৯ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর কিছুটা আগ্রাসী সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। প্রমোশন দিয়ে মাঠে নামানো হয় শাহিন শাহ আফ্রিদিকে। একাধিক জীবন পেয়ে তিনি কিছুটা ঝড় তোলেন। ১৩ বলে করেন ১৯ রান।

৭১ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর পাকিস্তানের তিন অঙ্কে পৌঁছানোই কঠিন মনে হচ্ছিল। তবে ইনিংসের শেষভাগে মোহাম্মদ হারিস ও মোহাম্মদ নাওয়াজের দারুণ জুটি দলকে এনে দেয় কিছুটা স্বস্তি। হারিস করেন ২৩ বলে ৩১ রান, আর নাওয়াজ করেন ১৫ বলে ২৫ রান।

বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন তাসকিন আহমেদ, ৪ ওভারে ২৮ রানে নেন ৩ উইকেট। মুস্তাফিজুর রহমান ও রিশাদ হোসেন তুলে নেন ২টি করে উইকেট।