বিসিবির নির্বাচন নিয়ে বাড়ছে বিতর্ক-অনিশ্চয়তা
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনের জন্য কাউন্সিলরদের নাম জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায়। এ সময়ের মধ্যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল। কিন্তু রাত পেরিয়ে সকালেও খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়নি। জরুরি বোর্ড মিটিং শেষেও কাউন্সিলরদের নাম জমা দেওয়ার বিষয়েও কিছু অস্পষ্টতা রেখে দিয়েছে বিসিবি।
একাধিক সূত্র বলছে, সন্ধ্যা ৬টায় সময়সীমা শেষ হলেও সব জেলা ও বিভাগ থেকে কাউন্সিলরদের নাম বোর্ডে জমা হয়নি। এমনকি রাত ৯টায় সময়ে সাবেক বোর্ড প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের ফরম বিসিবিতে এসে পৌঁছায়। এমন নানান কারণে বোর্ড সভাটি পিছিয়ে দেওয়া হয়।
এ নিয়ে বিসিবির পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির প্রধান ইফতেখার রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, তারা ৬টা ১১ মিনিটে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে জানেন, সভাটি রাত ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। তবে সে সময়ে বিস্তারিত কিছুই জানাননি তিনি।
অবশ্য গেল কয়েকদিন ধরেই জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলির কাছে বিসিবির কাউন্সিলর মনোনয়ন নিয়ে বিতর্ক চলছিল। ১৮ সেপ্টেম্বর বিসিবির সভাপতি আমিনুল ইসলামের চিঠির পর থেকেই কাউন্সিলরদের নাম জমা দেওয়ার সময় দুই দফায় বাড়ানো হয়। প্রথমে ১৯ সেপ্টেম্বর এবং পরে ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি এবং বোর্ডের সভা পিছিয়ে যাওয়ায় বিষয়টিও ক্রমশই জটিল হয়ে উঠেছিল। জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার প্রধানদের কাছে পাঠানো বিসিবি সভাপতি স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, বিসিবির কাউন্সিলর হিসেবে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে নাম প্রেরণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা যথাযথভাবে মানা হয়নি।
আগের ফরম বাতিল করে তাই বিসিবি থেকে পাঠানো নতুন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কাউন্সিলরের নাম পাঠাতে হবে। এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টির সমালোচনা করে ওল্ড ডিওএইচএসের কাউন্সিলর ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, ‘এই নোংরামিটা করা উচিত নয়। নির্বাচন হবে সুষ্ঠু। এখানে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না।’
আরও পড়ুন: প্রথমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতলেন ফরাসি উইঙ্গার উসমান দেম্বেলে
অন্যদিকে সোমবার দুপুরে এক রিট আবেদনের ভিত্তিতে ১৮ সেপ্টেম্বর বিসিবির সভাপতি আমিনুল ইসলামের দেওয়া চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্টের আদেশের দেড় ঘণ্টা পরই তা স্থগিত করে দেয় আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। ফলে আপাতত আর কোনো আইনি বাধার থাকছে না। নির্বাচনের তফসিলও বহাল থাকছে।
যদিও রিটকারীদের পক্ষের আইনজীবী যুক্তি ছিল, ‘আমরা বিসিবির গঠনতন্ত্র আদালতের সামনে হাজির করেছি; বিশেষ করে ৯ অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে দেখিয়েছি। অ্যাডহক কমিটি থেকে কাউন্সিলর মনোনয়নের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।’
বিসিবি সভাপতির চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী, ক্যাটাগরি-১ থেকে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের কাউন্সিলর মনোনয়ন শুধুমাত্র অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, ক্যাটাগরি-২-এর বেশির ভাগ ক্লাব ইতিমধ্যে তাদের কাউন্সিলর মনোনয়ন জমা দিয়েছে, ফলে তারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রায় নিশ্চিত।
ক্যাটাগরি-৩ মূলত সার্ভিসেস গ্রুপ, যেখানে পরিচালকদের ভোটের হিসাব-নিকাশ মাথায় রেখে কাউন্সিলর মনোনয়ন দিয়েছে বোর্ড। এ গ্রুপ থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দেবব্রত পাল। শেষ মুহূর্তে ক্যাটাগরি-১ ও ২ থেকে কারা টিকে থাকবেন, তা নিয়ে বাড়ছে অনিশ্চয়তা। নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জটিলতা ও বিতর্ক।