আসালঙ্কার সেঞ্চুরিতে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি শ্রীলঙ্কার
যেন ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে একাই লড়লেন চারিথ আসালঙ্কা। দলের অন্য ব্যাটারদের কেউই তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারলেন না। তবু দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দিতে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন স্বাগতিক অধিনায়ক। ছক্কা-চারের ফুলঝুরিতে মনে রাখার মতো এক সেঞ্চুরি করেছেন। তার ব্যাটে চড়েই চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেয়েছে স্বাগতিকরা।
বুধবার (২ জুলাই) কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৯ দশমিক ২ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে ৪ ছক্কা ও ৬ চারে ১২৩ বলে সর্বোচ্চ ১০৬ রান করেন আসালঙ্কা।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে বল হাতে দারুণ শুরু পান তানজিম হাসান সাকিব। প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন তিনি। তার অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরে থাকা বলটিতে পেস ও অতিরিক্ত বাউন্সে বিভ্রান্ত হন ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। কাট করতে গিয়ে ব্যাটে ঠিকঠাক বল লাগাতে পারেননি, উইকেটকিপার লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন। ৮ বল খেলে ০ রানে ফেরেন তিনি।
তানজিমের পর জোড়া উইকেটের দেখা পান তাসকিন। এদিন শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রিত লাইন ও লেন্থে বল করে যাচ্ছিলেন অভিজ্ঞ এই পেসার। সেই চাপেই জোড়া সাফল্য এসেছে। তার অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল ইনসাইড এজ হয়ে ভেঙে যায় মাদুস্কার স্ট্যাম্প। ১৩ বল খেলে মাত্র ৬ রান করে ফেরেন এই লঙ্কান ওপেনার।
তাসকিনের সাফল্যের পরের ওভারেই ১৪ রান হজম করেছিলেন তানজিম, এতে কিছুটা চাপমুক্ত হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিল শ্রীলঙ্কা। তবে সেই আশা টিকতে দেননি তাসকিন। ফের লঙ্কান শিবিরে আঘাত হানেন ডানহাতি এই পেসার। তাসকিনের বাউন্সি ডেলিভারিতে মিড-অফে দাঁড়ানো মিরাজের হাতে সহজ ক্যাচ দেন কামিন্দু মেন্ডিস। কোনো রান না করেই ফিরতে হয় তাকে।
ধ্বংসস্তূপে দাঁড়ানো দলটির হাল ধরেন চারিথ আসালাঙ্কা আর কুশল মেন্ডিস। সাবলীল ব্যাটিংয়ে স্কোরশিট সচল রাখেন তারা। তবে এই জুটি বড় হতে দেননি অভিষিক্ত তানভীর ইসলাম। ওয়ানডে অভিষেকে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট তুলে নেন বাঁ-হাতি এই স্পিনার।
তার ঘূর্ণিতে পা ফেলে এলবিডব্লিউ হন কুশল। ৪৩ বলে ৪৫ রানে থামেন তিনি। এতে আসালাঙ্কার সঙ্গে তার ৭৭ বলে ৬০ রানের জুটিও ভেঙে যায়।
এরপরও বড় জুটির ইঙ্গিত দিচ্ছিল লঙ্কানরা। তবে ইনিংসের ৩২তম ওভারে সেই জুটি ভাঙেন পার্টটাইম অফ-স্পিনার নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম বলে বাউন্ডারি হজমের পর নিজের চতুর্থ ডেলিভারিতে জানিথ লিয়ানাগেকে ফেরান তিনি। তানজিমের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ৪০ বলে ২৯ রান করে ফেরেন লিয়ানাগে।
এরপর মিলান রথনায়েকেকে ২২ রানে তানজিম এবং হাসারাঙ্গাকেও ২২ রানেই সাজঘরের পথ দেখান তাসকিন। একই ওভারে মাহিশ থিকশানাকেও (১) তুলে নেন এই পেসার।
তবে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝেই অনবদ্য এক সেঞ্চুরি তুলে নেন চারিথ আসালাঙ্কা। সাবলীল ব্যাটিংয়ে ১১৭ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পেয়েছেন লঙ্কান দলপতি। তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি এটি। ইনিংসের শেষ ওভারে প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ৬ চার আর ২ ছক্কায় ১২৩ বলে ১০৬ রানের ইনিংস সাজান আসালঙ্কা।
তাসকিন ৪৭ রানে ৪টি এবং ৪৫ রানে নেন ৩ উইকেট নেন তানজিম সাকিব।