১৭ জুন ২০২৫, ২২:৫৫

জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান, দ্বিতীয় দিন কেমন যাবে

নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের জোড়া সেঞ্চুরিতে দৃঢ় অবস্থানে বাংলাদেশ  © সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে শুরু ও শেষের গল্প ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। দিনের প্রথম সেশনে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়লেও শেষ পর্যন্ত নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের জোড়া সেঞ্চুরিতে দৃঢ় অবস্থানে থেকে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। বুধবার দ্বিতীয় দিন মুশফিক-শান্ত জুটি আরও এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে, এখন তো বলাই যায়।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দিনের খেলা শেষে ৯০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে সফরকারীদের সংগ্রহ ২৯২ রান। অপরাজিত রয়েছেন শান্ত (১৩৬*) ও মুশফিক (১০৫*)। চতুর্থ উইকেটে গড়া তাদের ২৪৭ রানের জুটি টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং সবমিলিয়ে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ জুটি।

দীর্ঘ দেড় বছর পর শান্ত পেলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি, আর মুশফিক প্রায় ৯ মাস পর খেললেন টেস্টে শতরান—এটি তার ১২তম সেঞ্চুরি। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের এই দৃঢ়তায় প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা তৈরি করেছে টাইগাররা।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে পা রাখা বাংলাদেশ দিনটা শুরু করে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে। দলীয় ৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা। এনামুল হক বিজয় (০) মাত্র ১০ বল খেলে আসিথা ফার্নান্দোর বলে স্লিপে কুশল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দেন। এরপর মুমিনুল হক ও সাদমান ইসলাম মিলে যোগ করেন ৩৪ রান, কিন্তু দুজনকেই ফিরিয়ে দেন অভিষিক্ত লঙ্কান স্পিনার থারিন্দু রত্ননায়েকে। মুমিনুল করেন ২৯ রান, সাদমান ১৪।

৩ উইকেটে ৪৫ রানে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশকে টেনে তোলেন অধিনায়ক শান্ত ও অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিক। দিনের বাকি সময়ে আর কোনো উইকেট হারায়নি সফরকারীরা। দুইজনই নিজেদের স্টাইল অনুযায়ী ব্যাট করেন। শান্ত প্রয়োজনমতো আক্রমণাত্মক হয়েছেন, অন্যদিকে মুশফিক ছিলেন ধৈর্যশীল ও বিচক্ষণ। তার শতক পূর্ণ করতে লেগেছে ১৭৬ বল, যেখানে ছিল মাত্র ৫টি বাউন্ডারি।

ইনিংসটি মুশফিকের জন্য অনেকটা প্রত্যাবর্তনের বার্তা। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ার নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। ২০২৩ সালের আগস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে করা ১৯১ রানের পর টানা ১৩ ইনিংসে ফিফটি ছাড়াতে পারেননি। আজকের সেঞ্চুরিতে সেই হতাশার খোলস ছুড়ে ফেলেছেন তিনি।

অন্যদিকে, শান্ত ২০২৪ সালে টেস্টে ছিলেন ফর্মহীন। গড় ছিল মাত্র ২১.১৩। তবে ২০২৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ফর্মে ফেরার আভাস দিয়ে এ ম্যাচে বড় সেঞ্চুরি করে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন। সবশেষ টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল ২০২৩ সালের নভেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি শান্তর দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।


শ্রীলঙ্কার পক্ষে থারিন্দু রত্ননায়েকে ২টি ও আসিথা ফার্নান্দো ১টি উইকেট শিকার করেছেন। বাংলাদেশ দ্বিতীয় দিনেও এই জুটি দীর্ঘায়িত করে লিড নেওয়ার আশায় থাকবে।