২৯ মে ২০২৫, ২০:৪২

আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছেন ফারুক

ফারুক আহমেদ   © সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) শীর্ষ পদে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। মূলত বুধবার (২৮ মে) রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের এক বৈঠকের পর থেকে এই গুঞ্জনের সূত্রপাত। যেখান দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদে তাকে না রাখার বার্তা দেওয়া হয়। তবে বিসিবি সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফারুক।

যদিও এরই মধ্যে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন বিসিবি সভাপতি। কেননা, ফারুকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) বরাবর চিঠি দিয়েছেন বিসিবির ৮ পরিচালক। চিঠিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ, একক আধিপত্য ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে অনাস্থা জ্ঞাপন করা হয়। ফলে, নিজের চেয়ার ধরে রাখতে মরিয়া ফারুককে হয়তো শেষমেশ লজ্জিত হয়ে বিদায় নিতে হচ্ছে। তবে এই চিঠি হাতে পেয়ে আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছেন ফারুক।

গণমাধ্যমে ফারুক বলেছেন, ‘দেখি, কী করা যায়। কিছু একটা তো অবশ্যই করব। আমি আমার আইনজীবীর সঙ্গেও কথা বলে রাখছি। প্রয়োজন হলে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব। অনাস্থার কোনো সুযোগই বিসিবির গঠনতন্ত্রে নেই। তাই অনাস্থায় কিছু এসে যায় না। হয় এই বোর্ড রাখবে, না হয় ভেঙে দেবে।’

ফারুকের বিরুদ্ধে যেসব পরিচালক এনএসসিতে চিঠি দিয়েছেন, নিজেদের অপকর্ম ঢাকতেই তারা এমন কাজ করেছেন বলেও মনে করছেন সাবেক এই অধিনায়ক।

ফারুকের ভাষ্য, ‘চিঠিটা আমার হাতেও এসেছে। ওরা যেসব অপকর্ম নিজেরা করত, সেগুলোই আমার নামে বসিয়ে দিয়েছে। দেখে আমি হাসতে হাসতে শেষ।’

উল্লেখ্য, গেল কয়েকদিন ধরেই বিসিবি সভাপতির পদ নিয়ে নানান জল্পনা-কল্পনা চলছে। গুঞ্জন ওঠেছিল, পদত্যাগ করতে পারেন ফারুক আহমেদ। মূলত ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে বিসিবি সভাপতির বৈঠকে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদে তাকে না রাখার বার্তা দেওয়া হয়।

এরই মধ্যে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বিসিবির দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টি চাউর হয়। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে ইতোমধ্যে ‘হ্যাঁ’ বলেছেন তিনি। তবে এর আগে অবশ্য ফারুককে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় তাকে সরিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। কোনো কারণে ফারুককে সরিয়ে দেওয়া হলে আইসিসির নিষেধাজ্ঞার খড়গ রয়েছে।

এর আগে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে গত বছরের ৫ আগস্ট নাজমুল হাসানের বোর্ডে থাকা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) মনোনীত দুই পরিচালক জালাল ইউনুস ও আহমেদ সাজ্জাদুল আলমকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাদের পরিবর্তে সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ এবং ক্রিকেট কোচ ও বিশ্লেষক নাজমূল আবেদীন ফাহিমকে এনএসসি নতুন পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেয়। পরে বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক। এর আগে, নাজমুল হাসান বোর্ড সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

কিন্তু মাত্র ৯ মাস পর হঠাৎ করে সরকারই কেন ফারুককে সভাপতির পদ থেকে সরাতে চাইছে, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন জেগেছে। কিন্তু ফারুক শীর্ষ পদে আদিষ্ট হওয়ায়, স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে বিষয়টি কীভাবে সুরাহা করা হবে, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩১ মে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের যে সভা হওয়ার কথা, সেটি স্থগিত করা হয়েছে।