মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে, তামিম ইকবালের আবেগঘন স্ট্যাটাস

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল গুরুতর অসুস্থতা কাটিয়ে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। আজ শুক্রবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি তার অভিজ্ঞতা ও কৃতজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।
তামিম লেখেন, আপনাদের সবার দোয়ায় ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমতে এখন আমি বাসায়। উথালপাথাল এই চারটি দিনে নতুন জীবন যেমন পেয়েছি, তেমনি আমার চারপাশকে আবিষ্কার করেছি নতুন করে। সেই উপলব্ধির সবটুকুতে মিশে আছে কেবল ভালোলাগা ও কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সবার ভালোবাসার ছোঁয়া ক্যারিয়ারজুড়ে নানা সময়ই পেয়েছি। তবে এবার তা অনুভব করতে পেরেছি আরও তীব্রভাবে। আমি সত্যিই আপ্লুত।
তার অসুস্থতার শুরুতে যাদের সহযোগিতা পেয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তামিম। তিনি বলেন, বিকেএসপিতে অসুস্থ হওয়ার পরপরই ম্যাচ রেফারি দেবব্রত পাল, বিকেএসপির চিকিৎসকরা, অ্যাম্বুলেন্স চালকসহ সেখানে উপস্থিত অনেকেই তাৎক্ষণিকভাবে তাকে সহায়তা করেছেন।
বিশেষ করে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ট্রেনার ইয়াকুব চৌধুরী ডালিমের অবদানের কথা আলাদা করে উল্লেখ করেন তিনি। তামিম লেখেন, "আমাদের ট্রেনার ইয়াকুব চৌধুরী ডালিম ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাব কীভাবে, আমার আসলে জানা নেই। আমি পরে জেনেছি, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন যে, ডালিম ভাই ওই সময় সঠিকভাবে সিপিআর না দিলে হয়তো আমাকে বাঁচানো যেত না। উপযুক্ত মানুষকে উপযুক্ত সময়ে আমার পাশে রেখে আল্লাহ আমাকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়েছেন।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাপোর্ট স্টাফ ওয়াসিম শুরু থেকেই তার পাশে ছিলেন এবং এখনও সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়ে আছেন।
চিকিৎসার জন্য তিনি যে কেপিজে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, সেখানকার চিকিৎসক ও নার্সদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তামিম বলেন, কেপিজে হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মনিরুজ্জামান মারুফ ও তার দক্ষ চিকিৎসক দল তাদের পেশাদারিত্ব আর আন্তরিকতার মিশেলে যেভাবে দ্রুততায় চিকিৎসা করেছেন, আমাদের দেশের চিকিৎসকদের মান ও কার্যকারিতাই ফুটে উঠেছে তাতে। আমি পরে শুনেছি যে, দেশের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ডা. মারুফ ও তার দল মিরাকল ঘটিয়েছেন।
তামিম আরও বলেন, হাসপাতালের প্রতিটি সদস্য—ডাক্তার, নার্স, সেবিকা ও অন্যান্য কর্মীরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে তার সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। ঢাকা শহরের বাইরে এত উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার উপস্থিতি তাকে নতুন করে আশাবাদী করেছে। তিনি মনে করেন, এ ধরনের হাসপাতাল দেশের বিভিন্ন জায়গায় আরও থাকলে অনেক মানুষের প্রাণ রক্ষা পেতে পারে।
তামিম তার স্ট্যাটাসের শেষ অংশে লেখেন, ধন্যবাদের তালিকা আসলে শেষ হওয়ার নয়। আরও অনেকেই নানাভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন, অনেকের কথা জানি, অনেকের কথা হয়তো জানি না। এতটুকু জানি, ধন্যবাদ পাওয়ার আশায় তারা কিছু করেননি। আমি তাদের ভালোবাসার ঋণে আবদ্ধ সারা জীবনের জন্য।
তবে তিনি এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেননি বলে জানান এবং সবার কাছে দোয়া চান। তার ভাষায়, পুরোপুরি সেরে ওঠার পথ এখনও দীর্ঘ। আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রার্থনায় রাখবেন। সবার জীবন সুন্দর ও শান্তিময় হোক। ভালোবাসা সবার জন্য।