০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৭

ট্রাভেল পাস ছাড়া অবৈধভাবে টিকিট বিক্রি, প্রথম দিনেই জাহাজকে জরিমানা জেলা প্রশাসনের

জেলা প্রশাসনের জরিমানা  © টিডিসি ফটো

সরকার অনুমোদিত ট্রাভেল পাস ছাড়া অবৈধভাবে পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রির দায়ে সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ‘কেয়ারি সিন্দাবাদ’–কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন রুটে যাত্রীবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়। যাত্রা শুরুর আগেই নিয়ম অমান্যের প্রমাণ পেয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত এ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী জানান, তিনজন পর্যটকের কাছে ১৮০০ টাকা করে ট্রাভেল পাস (কিউআর কোড) ছাড়াই সরাসরি টিকিট বিক্রি করায় কেয়ারি সিন্দাবাদের বিরুদ্ধে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “নির্দেশনা অনুযায়ী এভাবে টিকিট বিক্রি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কক্সবাজারের স্থানীয়রা কেবল জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে টিকিট কিনতে পারবেন। অন্য পর্যটকদের জন্য ট্রাভেল পাস বাধ্যতামূলক।”

তিনি আরও জানান, প্রথমদিন হওয়ায় গ্রেপ্তার না করে মুচলেকা নিয়ে জাহাজ কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম ঘটলে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।

এদিকে চলতি মৌসুমের প্রথমদিনের যাত্রা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ট্রাভেল পাস বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সেন্টমার্টিনে পৌঁছে বিকেলে একই জাহাজগুলো কক্সবাজারে ফিরে আসবে। গত বছর থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুট বন্ধ থাকায় দীর্ঘ সমুদ্রপথে যাত্রা কিছুটা কষ্টকর হতে পারে বলে মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক রোকসানা আলী। তবে তার মতে, 'দ্বীপের প্রাকৃতিক প্রশান্তি সেই কষ্টের পুরোটাই ভুলিয়ে দেবে।'

ঘাট থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। কক্সবাজার রিজিয়নের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, 'পর্যটকের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে আমরা সার্বক্ষণিক তৎপর। সমুদ্রপথে এবং দ্বীপে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।'

সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকার গত অক্টোবরে ১২ দফা নির্দেশনা জারি করে। এর মধ্যে রয়েছে—রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো নিষেধ, উচ্চ শব্দে অনুষ্ঠান, বারবিকিউ, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়াফল সংগ্রহ-বিক্রয়, প্রবাল-পাখি-কাছিমসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এছাড়া মোটরযান চলাচল বন্ধ ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যবহারও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

প্রথম দিনের যাত্রা পরিদর্শনে উপস্থিত জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের জানান, 'দ্বীপ রক্ষায় ঘোষিত নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। পর্যটক ও সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।'