ঘরে বসেই মেট্রোরেলের কার্ড রিচার্জ করবেন যেভাবে
মেট্রোরেলের স্থায়ী কার্ড রিচার্জ করতে আর স্টেশনে যেতে হবে না। ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, নগদ, রকেটসহ সব ধরনের অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসেই কার্ডে টাকা ভরা যাবে। এ সেবা চালু হচ্ছে আগামী ২৫ নভেম্বর। ডিটিসিএ জানিয়েছে, অনলাইন রিচার্জ প্রক্রিয়া সহজ করতে নিবন্ধন থেকে শুরু করে এভিএম যন্ত্রে কার্ড স্পর্শের পর্যন্ত সব ধাপ নির্ধারণ করা হয়েছে।
ডিটিসিএর নতুন ব্যবস্থায় প্রথমে ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে লগইন করতে হবে। এরপর রিচার্জ অপশনে গিয়ে গ্রাহক বেছে নেবেন র্যাপিড পাস নাকি এমআরটি পাস রিচার্জ করবেন। পরে ব্যাংক কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের যেকোনো পেমেন্ট মাধ্যম নির্বাচন করে টাকা পরিশোধ করতে হবে। পেমেন্ট সম্পন্ন হওয়ার পর স্টেশনে স্থাপন করা নতুন যন্ত্রে কার্ড স্পর্শ করলেই রিচার্জ কার্যকর হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, অনলাইনে রিচার্জ করতে পেমেন্ট গেটওয়ের অতিরিক্ত ফি গ্রাহককে বহন করতে হবে। অনলাইনে দেওয়া টাকা প্রথমে ‘অপেক্ষমাণ’ অবস্থায় থাকবে এবং তিন মাস পর্যন্ত বৈধ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে এভিএম যন্ত্রে কার্ড স্পর্শ না করলে টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ফেরত যাবে, তবে ১০ শতাংশ সার্ভিস চার্জ কেটে নেওয়া হবে। গ্রাহক চাইলে সাত দিনের মধ্যে রিচার্জ ফেরত নিতে পারবেন; সেক্ষেত্রেও একই হারে ১০ শতাংশ ফি প্রযোজ্য হবে।
ডিটিসিএ সূত্র জানিয়েছে, গত সোমবার থেকে স্টেশনগুলোতে এভিএম যন্ত্র বসানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশনে ২১ ও ২২ নভেম্বর প্রতিটি স্টেশনে দুটি করে মোট ৩২টি যন্ত্র স্থাপন করা হবে।
বর্তমান ব্যবস্থায় রিচার্জ করা টাকা ও গ্রাহকের তথ্য এমআরটি ও র্যাপিড পাস কার্ডের ভেতরেই সংরক্ষিত থাকে, যা স্টেশনের গেটে থাকা যন্ত্র পড়ে নেয়। কিন্তু অনলাইন রিচার্জ সফটওয়্যারে সংরক্ষিত থাকবে বলে সাধারণ গেটে টাচ করলে তা দৃশ্যমান হবে না। এজন্য আলাদা এভিএম যন্ত্রে স্পর্শ করে কার্ডের তথ্য হালনাগাদ করতে হবে। এরপর স্বাভাবিক নিয়মেই গেটে টাচ করে যাতায়াত করা যাবে।
এমআরটি বা র্যাপিড পাস কার্ড ব্যবহার করলে যাত্রীরা ১০ শতাংশ ছাড় পান। বর্তমানে মেট্রোরেলের মোট যাত্রীর ৫৫ শতাংশ এ কার্ড ব্যবহার করেন, আর ৪৫ শতাংশ যাত্রী নেন একক যাত্রার কার্ড।
মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনায় সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ট্রেন চালানোর কথা বলা হয়েছিল। পূর্ণ সক্ষমতায় প্রতি সাড়ে তিন মিনিট পরপর ট্রেন চললে ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দিনে প্রায় ৫ লাখ যাত্রী পরিবহন সম্ভব। বর্তমানে কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ চলছে। প্রকল্পটি শেষ হলে দৈনিক যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা দাঁড়াবে ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
বর্তমানে দিনে গড়ে পৌনে পাঁচ লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করেন। গত অক্টোবরে সময়সূচি পরিবর্তন করে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেন সকাল সাড়ে ছয়টায় এবং শেষ ট্রেন রাত সাড়ে নয়টায় ছাড়ছে। মতিঝিল থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়ছে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে এবং শেষ ট্রেন রাত ১০টা ১০ মিনিটে।
আগামী মাসে ট্রেনের মধ্যবর্তী সময় দুই মিনিট কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এতে দৈনিক যাত্রীসংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।