২৪ অক্টোবর ২০২৫, ২২:২৮

নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নামার অপেক্ষায় উপকূলের হাজারো জেলে

জাল প্রস্তুত করছেন একজন  © টিডিসি

২২ দিন মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও নদীতে নামার অপেক্ষায় উপকূলের হাজারো জেলেরা। তবে আশার সঙ্গে আছে হতাশাও। কারণ, ট্রলিং ট্রলারের দৌরাত্ম্যে এবার ইলিশ কম মিলবে বলে মনে করছেন তারা। তবু নতুন আশার আলো হাতে নৌজাল নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই। দীর্ঘ বিরতির পর জীবিকার নৌকা ভাসানোর শেষ প্রস্তুতিতে এখন তৎপর জেলেপল্লি।

মেঘনা, বিষখালী আর বলেশ্বর নদীর তীরে বেড়েছে কর্মচাঞ্চল্য। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় থেমে ছিল জেলেদের জীবিকা, এখন সেই নদীতেই আবার নামার প্রস্তুতি চলছে। কেউ নতুন জাল তৈরি করছেন, কেউ পুরোনো জাল মেরামত করছেন, কেউ ট্রলার সংস্কারে ব্যস্ত, আবার কেউ ট্রলারে নিচ্ছেন বরফ। সব আয়োজন প্রায় গুছিয়ে, এখন শুধু নদীতে নামার অপেক্ষা।

গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর রাত পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণে নদীতে মাছ ধরা, বিক্রি ও পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। এ সময়ে মাছ ধরতে না পারায় কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন হাজারো জেলে পরিবার। এখন নিষেধাজ্ঞা শেষে অন্ধকার কাটিয়ে আলোর মুখ দেখার আশায় দিন গুনছেন তারা।

জেলেদের দাবি, ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় চাল বিতরণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত ছিল না। তবু প্রত্যাশা—নিষেধাজ্ঞার সুফলে এবার নদীতে ইলিশের প্রাচুর্য মিলবে।

পোটকাখালী গ্রামের জেলে আশরাফ আলী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় কষ্ট হইছে, তবে মা ইলিশ বাঁচলে আমাদেরই লাভ। চাল পাইছি, কিন্তু সংসার চলে না। এখন শুধু নদীতেই ভরসা।’

পাথরঘাটার জেলে মাসুম বলেন, ‘আমরা নিষেধাজ্ঞা মানি, কিন্তু ট্রলিং ট্রলার বন্ধ না করলে লাভ নাই। ওরা মাছ মারে, আমরা খালি হাতে ফিরি। এভাবে চললে কিছুদিন পর নদীতে ইলিশই থাকব না।’

রহিম মাঝি বলেন, ‘এত দিন পর নদীতে নামব, মাছ ধরতে পারলে ঋণ শোধ করতে পারব। মাছ দেখলেই কষ্ট ভুইলা যাই। নতুন জাল কিনে প্রস্তুত আছি। আশা করি ইলিশ ধরতে পারলে ২২ দিনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব।’

জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় নিয়মিত অভিযান চালানো হয়েছে। আইন ভাঙলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আশা করি, এবার জেলেরা নদীর রুপালি ইলিশ পাবে। গভীর সমুদ্রের ট্রলিং ট্রলারগুলোও নজরদারিতে আছে।’