রাজধানীর মোড়ে মোড়ে আন্দোলন, স্থবির নগরে নাকাল মানুষ
সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকার মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। আজ রবিবার (১২ অক্টোবর) সপ্তাহের প্রথম দিন বহুমুখী আন্দোলনে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অবরোধের ফলে অফিসগামী মানুষ, রোগী পরিবহনসহ সবাই ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সকাল থেকে রাজধানীর প্রেসক্লাব এলাকায় মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতার দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা অবস্থান কর্মসূচি করছেন। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে আলোচনা করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসেছেন দুই শিক্ষক।
২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়ার প্রজ্ঞাপন ছাড়া শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করবেন না বলে জানিয়েছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। অর্থ মন্ত্রণালয়ে আলোচনা শেষে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী এ ঘোষণা দেন। পরে অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন শিক্ষকরা।
জানা গেছে, অবস্থান কর্মসূচি প্রেসক্লাব থেকে শহীদ মিনারে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেন শিক্ষক নেতারা। তবে একপক্ষের বিরোধিতা করে সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ করার দাবি তুলেছেন। বাড়ি ভাড়া ২০ শতাংশ করা না হলে তারা ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন।
এদিকে রাজধানীর শাহবাগে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ ও ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশ বঞ্চিত সনদধারীদের নিয়োগে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির দাবিতে মহাসমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি চলছে। এ কর্মসূচি থেকে দুই দফা দাবি মেনে আজই প্রজ্ঞাপন জারি না করলে রাজপথ না ছাড়া এবং আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অবস্থানকারীরা।
অন্যদিকে আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাইন্সল্যাব অবরোধ করেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা কলেজে ইন্টারমিডিয়েট বহাল রাখার দাবিতে তারা এ অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া সকাল ১১ টার রাজধানীর কুড়িল থেকে মালিবাগ পর্যন্ত একপাশের রাস্তায় প্রচণ্ড জ্যাম ছিলো। সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনরা এ নিয়ে বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেন। দুপুরের পরও নতুন বাজার এলাকা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত কোথাও এক পাশ আবার কোথায় দুপাশের রাস্তায় জ্যাম লক্ষ করা যায়।
যানজটে দুর্ভোগের শিকার বেসরকারি চাকরিজীবী ইমতিয়াজ আহমেদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আজ সকালে শ্যামলী থেকে বাংলামোটর আসতে আমার দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে তাও অনেকটা পথ হেঁটে এসে। এখন এটা যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে- প্রতিদিনই দেখা যায়, কেউ না কেউ রাস্তায় নেমেছে নিজের দাবি আদায়ের জন্য। কেউ ভাবছে না, এতে অন্যদের কী ভোগান্তি হচ্ছে। রাস্তায় মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে, অথচ সরকার যেন এসব নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তা নেই।’
অন্য এক যাত্রী জানান, আন্দোলন করলে মানুষদের ভোগান্তিতে ফেলে কেন করতে হবে? শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে সমস্যা কোথায়? আমার এক আত্মীয় প্রেসক্লাবের এদিকে হাসপাতালে আছেন। এখন আমি বুঝছিনা মগবাজার থেকে কোন দিক দিয়ে গেলে আমি সুন্দরভাবে পৌঁছাতে পারবো।