ভোরের আলোয় লাল শাপলার গালিচা, সৌন্দর্য দেখতে পর্যটকদের ভিড়
ভোরের আকাশে সূর্যের প্রথম কিরণ যখন পানির বুকে ছড়িয়ে পড়ে, তখন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার বিস্তীর্ণ বিলগুলো রঙিন হয়ে ওঠে লাল শাপলার সমারোহে। হাজারো শাপলার পাপড়ি একসঙ্গে ফুটে উঠে বিলজুড়ে তৈরি করে লাল গালিচার মতো দৃশ্য।
প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে ভোরেই ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা। কারও হাতে ক্যামেরা, কেউবা নৌকায় ভেসে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। স্থানীয়দের ভাষায়, শাপলার আসল রূপ দেখতে হলে ভোরে আসতেই হবে, কারণ দুপুরের দিকে অনেক ফুল বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক আসলাম শেখ বলেন, ‘ভোর চারটায় নৌকা নিয়ে বের হয়েছিলাম। সূর্যের আলো ফুটতেই একসঙ্গে হাজারো শাপলা ফুটতে শুরু করল। মনে হলো, প্রকৃতি যেন নতুন করে জন্ম নিচ্ছে আমার চোখের সামনে।’
স্থানীয়দের মতে, গোপালগঞ্জের অন্তত ২৫টির মতো বিল এখন লাল শাপলায় ভরা। বর্ষার সময় ধান কাটার পর জমে থাকা পানিতেই প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয় এই ফুল। আশ্চর্য হলেও সত্যি—এই শাপলাগুলো কেউ বোনে না, প্রকৃতিই এদের উপহার দেয়।
শুধু স্থানীয় নয়, প্রতিদিনই ঢাকা, খুলনা, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। পরিবার-পরিজন কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে তারা ভেসে যাচ্ছেন শাপলার লালিমায়।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, লাল শাপলার বিলগুলোকে ঘিরে পর্যটনবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার পরিকল্পনা চলছে। দর্শনার্থীদের জন্য নানা সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
তবে এই সৌন্দর্য সারাবছর থাকে না। পানি শুকিয়ে গেলে কৃষকেরা আবার ধান চাষে নামেন। তখন বিল ভরে ওঠে সোনালী ধানে। তাই প্রকৃতির এই লাল কারুকাজ দেখতে চাইলে এখনই চলে আসতে হবে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার বিলে।