০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:৫৩

স্বাভাবিক জনজীবনে ফিরছে খাগড়াছড়ি, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে প্রশাসন

সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত স্বনির্ভর এলাকা পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক  © টিডিসি ফটো

টানা কয়েকদিনের উত্তেজনা ও সহিংসতার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠছে খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি। বুধবার (১ অক্টোবর) সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রাণচাঞ্চল্যের চিত্র দেখা যায়। দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে, হাট-বাজারে মানুষের ভিড় বাড়ছে, আর সড়কে ছেড়ে যাচ্ছে যানবাহন। দুপুরের পর থেকে প্রধান সড়কগুলোতে যানচলাচলও বাড়তে থাকে।

কয়েকদিনের থমথমে পরিস্থিতিতে মানুষের মনে যে ভয় ও উৎকণ্ঠা ছিল, তা কাটতে শুরু করেছে। তবে পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না স্থানীয়রা। এখনো বলবৎ আছে ১৪৪ ধারা যা কার্যকর রয়েছে জেলা সদর, পৌর এলাকা এবং গুইমারা উপজেলায়। প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত হলে ধাপে ধাপে এই ধারা প্রত্যাহার করা হবে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে আনাই এখন প্রধান লক্ষ্য।

নিরাপত্তা জোরদার
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের যৌথ টহল চলছে জেলা জুড়ে। গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও প্রবেশপথে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট, যেখানে চলছে কড়াকড়ি তল্লাশি। এতে সাধারণ মানুষের মনে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরছে।

পুলিশ ও বিজিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। অপরাধীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে কঠোর অবস্থানের কথাও জানিয়েছেন তারা।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে প্রশাসন
এদিকে বিকালে জেলা সদরের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত স্বনির্ভর এলাকার ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, প্রশাসন তাদের পাশে আছে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি আমরা বিশেষ বরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবো।’

তদন্ত কমিটি গঠন 
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ ঘটনায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্ত কমিটির প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে।

পরিস্থিতি উপর নির্ভর করে ১৪৪ ধারা 
পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হলে ১৪৪ ধারা জারি শিথিল করা হবে। এই জারি প্রত্যাহার করা হলে সবাইকে জানানো হবে।

সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া
কয়েকদিনের অচলাবস্থার পর হাট-বাজার সচল হওয়ায় স্থানীয়রা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে ১৪৪ ধারা ও কড়াকড়ি তল্লাশির কারণে চলাচলে এখনও কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে জানান তারা।

এর আগে, এক বিজ্ঞপ্তিতে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রতি সম্মান জানিয়ে এবং প্রশাসনের ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বা পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অবরোধ স্থগিত করে অবরোধকারী জুম্ম ছাত্র-জনতা।