ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাটের বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে শঙ্কায় কৃষক
চলতি মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরাঞ্চলে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন গ্রামাঞ্চলে চলছে পাট কাটা, মারাই ও শুকানোর কাজ। তবে মৌসুমের শুরুতে পাট পচানোর জন্য কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ পানি না পাওয়ায় ভাটি অঞ্চলের কৃষকরা বেশ বিপাকে পড়েছেন।
কৃষকদের অভিযোগ, পাট চাষে খরচ বেড়ে গেলেও বাজারে ন্যায্য দাম মিলছে না। ফলে অনেকেই পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। যদিও জেলা প্রশাসন জানিয়েছে এ বছর পাটের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
একসময় বিদেশে রপ্তানির সুবাদে ‘সোনালি আঁশ’-খ্যাত পাট ছিল অর্থকরী ফসল। এখন আর সেই সোনালি দিন নেই। তবু বংশপরম্পরায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃষকরা পাট আবাদ করছেন। এ বছর প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে পাটের আকার ছোট হলেও ফলন হয়েছে বাম্পার। তবে বর্ষায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট গাদা ও পচানো নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের।
স্থানীয় কৃষক মো. জাকির বলেন, ‘সারের দাম বেশি, হালচাষের খরচও বেড়েছে। সব খরচ মেটাতে গিয়ে বিক্রির দামে আর পোষায় না। এ বছর ৩২০০ টাকা দরে পাট কিনছে। সরকার যদি দাম নির্ধারণ করে দিত, তাহলে আমরা ন্যায্য মূল্য পেতাম।’
আরেক কৃষক মো. হারিজ মিয়া বলেন, ‘প্রতিবছর সরকারের নির্ধারিত দামের আশায় পাট করি। কিন্তু বাজারে সেই দাম পাই না। এবছর পানি না থাকায় দূরে গিয়ে পাট পচাতে হচ্ছে, খরচও বেড়েছে। আমাদের জন্য নির্দিষ্ট দাম ঠিক করে দিলে কৃষকরা কিছুটা হলেও উপকৃত হতো।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মোস্তফা এমরান হোসেন বলেন, ‘চলতি মৌসুমে জেলার নাসিরনগর, সরাইল, বিজয়নগর, নবীনগর ও বাঞ্ছারামপুরের ৪ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে দেশি, কেনাফ, মেছতা ও তোষা জাতের পাট আবাদ হয়েছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৪৫৩ হেক্টর। এ বছর কেনাফ জাতের পাটের ফলন ভালো হয়েছে। অন্তত ৬০ কোটি টাকার পাট বিক্রি হবে বলে আশা করছি।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, নাসিরনগর অঞ্চলটি পাটের জন্য বেশ উপযোগী। তবে এ বছর পানি কম থাকায় কৃষকরা কিছু সমস্যায় আছেন। বাজার মনিটরিংয়ে জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ নজরদারি রাখবে যাতে কৃষকরা ন্যায্য দাম পান। দ্রুত সময়ের মধ্যেই পাটের বাজারমূল্য নির্ধারণ করে জানিয়ে দেওয়া হবে।