রংপুরে শিক্ষার্থী হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন, থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি
রংপুরের কাউনিয়ার বালাপাড়া ইউনিয়নের নিচপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে শিক্ষার্থী আয়েশা পারভীন সুখীকে হত্যার ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় সাত দিনের মধ্যে অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা না হলে কাউনিয়া থানা ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় রংপুর মেট্রোপলিটনের হারাগাছ থানাধীন গোল্ডেনের ঘাট এলাকায় ধুমেরপাড় সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা ও বাংলাবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকশ শিক্ষার্থী এই মানববন্ধন করে।
হত্যার শিকার শিক্ষার্থী আয়েশা পারভীন সুখী রংপুর মেট্রোপলিটনের হারাগাছ থানাধীন মধ্য ঠাকুরদাস এলাকার আবুল হোসেনের কন্যা ও ধুমেরপাড় সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার মানবিক বিভাগের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
মানববন্ধনে সুখীর বাবা আবুল হোসেন বলেন, ‘গত ৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে তার মেয়ে জামাই জুয়েল মিয়ার বড় ভাই জসিম ফোন করে তাকে জানায়, ‘তাওয়াই, আপনার সুখী মারা গেছে।’ এ সংবাদ শোনার পর তিনি তার দুই ছেলে সাহেব আলী ও আরমানকে সেখানে পাঠান। তারা গিয়ে দেখতে পান, সুখীর লাশ মাটিতে পড়ে আছে। কিন্তু এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে তারা আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। পরবর্তী সময়ে আবুল হোসেন নিজেও ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়ের নিথর দেহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আমার মেয়ে যদি সত্যিই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকে, তাহলে আমরা আসার আগেই কেন লাশ মাটিতে নামানো হলো?’ আবুল হোসেনের অভিযোগ, তার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
অন্যদিকে সুখীর স্বজন ও সহপাঠীরা দাবি জানিয়েছে, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, এমনকি ফাঁসির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় আগামী সাত দিনের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা না হলে থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন সহপাঠী ও এলাকাবাসীরা।
জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর কাউনিয়া থানার নিচপাড়ায় স্বামীর বাড়িতে আয়েশা পারভীন সুখী হত্যার শিকার হওয়ার পর ওই দিন রাতেই নিহতের বাবা আবুল হোসেন কাউনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় সুখীর স্বামী জুয়েল মিয়া, দেবর জসিম উদ্দিন ও তার স্ত্রী রুমি, শ্বশুর নজরুল ইসলাম ও শ্বাশুড়ি জোসনা বেগমকে আসামি করা হয়।
কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ শাহ্ বলেন, সুখী হত্যার ঘটনায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান।