চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ, ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট
চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং ছাত্র-জনতার ডাকা ‘পটিয়া ব্লকেড কর্মসূচি’র কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে আনোয়ারা উপজেলা সদরের প্রায় আড়াই কিলোমিটার জুড়ে থেমে গেছে যান চলাচল, চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
বুধবার (২ জুলাই) সকাল থেকে পটিয়া থানার সামনে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ফলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন আটকে পড়ে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় অনেক গাড়ি বিকল্প হিসেবে আনোয়ারা-চন্দনাইশ সড়কে ওঠে, কিন্তু রাস্তা সরু হওয়ায় আনোয়ারা সদরে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
ঢাকাগামী যাত্রী আবদুল গফুর জানান, আমার ঢাকায় জরুরি অফিসিয়াল মিটিং রয়েছে। দুপুর ১২টায় বের হলেও এখনো আনোয়ারা পার হতে পারিনি। গাড়ি চলছে না একদম।
চট্টগ্রামগামী যাত্রী খাদিজা আক্তার বলেন, ‘বাচ্চা নিয়ে বের হয়েছি। গরমে আর ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। গাড়িতে পানিও শেষ হয়ে গেছে, তবু গাড়ি নড়ছে না।’
এক ট্রাকচালক হেলাল জানান, ‘দুপুর থেকে আটকে আছি। মালামাল সময়মতো পৌঁছাতে না পারলে আমাদেরই ক্ষতি। বিকল্প পথে এসে আরও বিপদে পড়েছি।’
কক্সবাজারগামী এক বাসচালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কোনো ঘোষণা ছাড়াই রাস্তায় অবরোধ দিলে যাত্রীরা আমাদের ওপর রাগ ঝাড়েন।’
এ বিষয়ে আনোয়ারা ট্রাফিক পুলিশের টিআই আজাদ বলেন, ‘পটিয়ায় আন্দোলনকারীরা সড়কে অবস্থান নেওয়ায় মহাসড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হলে আনোয়ারা সদরে যানজট সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।’
পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
উল্লেখ্য, পটিয়ায় ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ২৩ জন আহত হন। এরই প্রতিবাদে বুধবার ‘পটিয়া ব্লকেড কর্মসূচি’ পালন করা হয়।
আন্দোলনকারী ছাত্র ও এনসিপি নেতারা অভিযোগ করেন, পটিয়ার ওসির নির্দেশেই আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তারা ওসির অপসারণসহ দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।