২৯ জুন ২০২৫, ১৩:৫৫

নতুন বাংলাদেশ দিবস ঘোষণা প্রসঙ্গে ফজলুর রহমানের হুঁশিয়ারি

ইটনায় শোকসভা ও দোয়ার মাহফিলে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান  © টিডিসি ফটো

নতুন বাংলাদেশ দিবস ঘোষণা প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, এই দেশের নাম বাংলাদেশ থাকবে, এই দেশে যত দিন চন্দ্র-সূর্য উঠবে, তত দিন বাংলার ৩০ লাখ শহীদের নাম কেউ ভুলবে না। বাংলাদেশ ছাড়া এই দেশের নাম আমরা কোনো দিন কেউ পরিবর্তন করতে দেব না।

তিনি আরও বলেন, যদি এই দেশের নাম আবার পাকিস্তান না চান, তাহলে তৈরি থাকেন। নতুন বাংলাদেশ হবে কেন? বাংলাদেশ ৭১ সালেই সৃষ্টি হয়েছে। চক্রান্ত চলছে। সেই চক্রান্তের বিরুদ্ধে সবাইকে হুশিয়ার থাকতে হবে।

শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার চৌগাংগা ইউনিয়নের চৌগাংগা কামিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে চৌগাংগা ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত আব্দুল জব্বারের রুহের মাগফিরাত কামনায় শোকসভা ও দোয়ার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। চৌগাংগা ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এই শোকসভা ও দোয়ার মাহফিলের আয়োজন করে।

ফজলুর রহমান বলেন, দেশ-জাতি আজ বড় বিপদের সামনে পড়েছে। এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ একটা দুঃসময়ের মধ্যে আছে। আজ মুক্তিযুদ্ধ যখন সবচেয়ে দুঃসময়ে পড়েছে, এই সময়ে আমি আঙুল সোজা করে বলতে চাই সবকিছু দেব, মুক্তিযুদ্ধ আমি কাউকে দেব না। মাথা উঁচু করে বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে আমি কোনো দিন হারিয়ে যেতে দেব না, সে যে-ই হোক। আমি লাভ চাই না, লোভ চাই না, ক্ষমতা চাই না, অর্থ চাই না, বিত্ত চাই না, জীবন চাই না, চাই শুধু বাঙালি জাতির একটা স্বাধীন রাষ্ট্র থাকবে, যে রাষ্ট্রটা আমরা যুদ্ধ করে সৃষ্টি করেছিলাম। ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে বলে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মানি না মানে হচ্ছে মাকে মানি না। বাঙালি জাতির মা হলো মুক্তিযুদ্ধ।

আরও পড়ুন : কুমিল্লায় নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় জামায়াত আমিরের প্রতিক্রিয়া ও দাবি

বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের দমন-পীড়ন প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, বছরের পর বছর আমি দেশে আসতে পারিনি। আবদুল হামিদ আমাকে দেশে আসতে দেননি। আমার মা-বাবার কবরে গিয়ে মোনাজাত পড়তে দেননি। ঈদের দিন আমি দেশে আসতে পারিনি। আমাকে নির্বাসনে রাখছেন আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দিয়ে আমাকে জেলখানায় রাখছেন।

ফজলুর রহমান বলেন, আজ আমি কোথায় আর আবদুল হামিদ কোথায়, একটু বিচার করেন তো আপনারা। আল্লাহ কার পক্ষে আপনারা দেখেন। এখন জামায়াতে ইসলামীর করুণা নিয়ে আবদুল হামিদকে বেঁচে থাকতে হয়। তার শালা জিহাদ খান এখন করিমগঞ্জ-তাড়াইলের জামায়াতে ইসলামীর ক্যান্ডিডেট। জামায়াতের করুণা নিয়ে গোলাম আজমের ছেলে আযমীর করুণা নিয়ে আর জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের দোয়া নিয়া তাকে সরকারকে বাধ্য করে বিদেশ যেতে হয় এবং ফিরে আসতে হয়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হামিদরা এখন জামায়াতে ইসলামীর করুণায় বাংলাদেশে বেঁচে আছেন। এদের থু থু দিতে হয়।

ফজলুর রহমান যোগ করে বলেন, জামায়াতে ইসলামীর করুণা নিয়ে এক সেকেন্ড পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চাই না, না, না, না। আমি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের করুণা নিয়ে এ দেশে বাঁচতে চাই না।

আরও পড়ুন : শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছাল, পরিবারে হতাশা

চৌগাংগা ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি তোফায়েল আহমেদ তোতা মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শোকসভায় ফজলুর রহমান বলেন, আজ দেশ কোন দিকে গেছে দেখেন। আমি বলেছিলাম, ছয় দিন টাইম চেয়ে আপনি এক ঘণ্টা টাইম দিলেন না ইউনূস সাহেব। এখন এমন হইছে যে ১৫ ঘণ্টা প্লেন চালাইয়া লন্ডন গেছেন। গিয়ে আবার বুঝ করে আসছেন। ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন দেবেন। আলহামদুলিল্লাহ। আমি আর গন্ডগোল করতে চাই না। জীবনে আর ফাইট করতে চাই না। আপনি শেষ করেন। কিন্তু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন না কেন?

শোকসভায় অন্যদের মধ্যে জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা, ইটনা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন, ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, সিনিয়র সহসভাপতি মো. মনির উদ্দিন, সহসভাপতি সোহরাব হোসেন মীর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ রহমান এবং অঙ্গসংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।