৪০ বছরের ছমির এখনো শিশু, দুশ্চিন্তায় পরিবার
বয়স প্রায় ৪০ বছর হলেও এখনো দেখতে শিশুর মতো কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর আছর উদ্দিন, যিনি ছমির নামে পরিচিত। বয়স বাড়লেও তার আচরণ, কথা-বার্তা ও জীবনধারা পুরোপুরি একটি শিশুর মতোই রয়ে গেছে। এমন ব্যতিক্রমী শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কারণে দীর্ঘদিন ধরে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন ছমিরের পরিবার। অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসাও করাতে পারছেন না তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাড়ার শিশুদের সঙ্গে মিশে খেলায় মেতে আছেন ছমির। তার শরীরী ভাষা ও ব্যবহারে কোথাও বোঝার উপায় নেই যে তিনি প্রায় ৪০ বছরের প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। কখনো বাবার হাত ধরে বাজারে যাচ্ছেন, আবার কখনো দোকান থেকে কিনে খাচ্ছেন বিস্কুট বা চিপস—সবই যেন একজন শিশুর মতো।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামের দিনমজুর আজিম উদ্দিন ও গৃহকর্মী আছিয়া বেগম দম্পতির বড় সন্তান ছমির। তার ছোট ভাই ও বোন বিয়ে করে সংসার পেতেছেন, কিন্তু ছমির রয়ে গেছেন সময়ের গহ্বরে বন্দী হয়ে—একটি শিশুর অবস্থায়।
ছমিরের মা মোছা. আছিয়া বেগম বলেন, ‘ছেলেটা জন্ম থেকেই একটু আলাদা। বয়স বাড়লেও শিশুর মতোই রয়ে গেছে। আমরা গরিব মানুষ, চিকিৎসা করাতে পারি না। আমি অন্যের বাসায় কাজ করি, ছেলের কারণে সেটাও ঠিকমতো হয় না। ওকে নিয়ে খুব কষ্টে আছি।’
আরও পড়ুন: জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম-জন্মতারিখ ভুল, বেতন বন্ধ ৫ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর
এদিকে স্থানীয়রাও ছমিরের দুর্দশা দেখে সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। প্রতিবেশী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ছেলেটা পুরো গ্রামেই শিশু হিসেবেই পরিচিত। ছোটরাও তাকে নিজেদের মতোই ভাবে। কিন্তু পরিবার খুব কষ্টে আছে। সরকারের উচিত তার চিকিৎসা নিশ্চিত করা।’
কুড়িগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. এস এম আমিনুল ইসলাম জানান, এটি সম্ভবত জন্মগত হরমোনজনিত একটি জটিলতা। সঠিক চিকিৎসা পেলে তার উন্নতি সম্ভব।
ছমিরের পরিবার এখন সরকারের সহানুভূতি ও দানশীল মানুষের সহযোগিতার দিকে তাকিয়ে আছে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে হয়তো এভাবেই একটি জীবন হারিয়ে যাবে সমাজের দৃষ্টি সীমার বাইরেই।