বেনাপোল কাস্টমস © টিডিসি ফটো
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের অপসারণ ও ‘প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক বদলি’ আদেশ বাতিলের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো কলমবিরতি পালিত হয়েছে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (২৫ জুন) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলে।
এর আগে সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সীমিত পরিসরে কাজ চললেও বেলা গড়াতেই কার্যক্রম একেবারে স্থবির হয়ে পড়ে। কাস্টম হাউসের অনলাইন সার্ভার বন্ধ থাকায় বিল অব এন্ট্রি দাখিলসহ গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম থমকে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন আমদানি-রফতানিকারক ও বন্দর ব্যবহারকারীরা।
বেনাপোল বন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন জানান, ‘কাস্টমস হাউসে শুল্কায়ন বন্ধ থাকলেও বেনাপোল-পেট্রাপোল দিয়ে আমদানি-রফতানি ও যাত্রীসেবা স্বাভাবিক রয়েছে।’
কলমবিরতির প্রভাব পড়েছে বাণিজ্যেও। পণ্য খালাসে তৈরি হয়েছে জট। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘কলমবিরতির কারণে বিল দাখিল ও শুল্ক পরিশোধে দেরি হচ্ছে। যদিও কর্মকর্তারা পরে ফাইলে সই করেছেন, কিন্তু বিকেল ৪টার পর ব্যাংক শুল্ক জমা নেয় না। এতে পুরো প্রক্রিয়াই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুপুর ১২টার পর থেকে কাস্টম হাউসে কার্যত সব ধরনের শুল্কায়ন কাজ বন্ধ ছিল। যদিও অফিস খোলা ছিল, কর্মকর্তারা কেউ টেবিলে ছিলেন না। ফলে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,
‘আগামী ২৭ জুনের মধ্যে প্রতিহিংসামূলক বদলি আদেশ বাতিল ও এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ না হলে ২৮ জুন থেকে কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দফতরে লাগাতার শাটডাউন কর্মসূচি চালু হবে।’
আগামী ২৬ জুন বৃহস্পতিবারও একইভাবে দুপুর ১২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কলমবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
এই সংকট নিরসনে অর্থ উপদেষ্টা আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেল ৫টায় বিসিএস (কর) ও বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চলমান বিরোধ নিরসনের লক্ষ্যে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার বিষয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
অর্থ উপদেষ্টা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলতি অর্থবছরের শেষ সময়ে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।