ঈদযাত্রায় ভাড়া নৈরাজ্য ও হয়রানি বন্ধের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
ঈদকে কেন্দ্র করে দেশের সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যাত্রী পরিবহন খাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং যাত্রী হয়রানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে সংগঠনের কার্যকরী কমিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ জকরিয়া ও মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এই নৈরাজ্য রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
বিবৃতিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি উল্লেখ করে, সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে বিভিন্ন পরিবহন সংস্থা প্রকাশ্যেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে চলেছে। এমনকি ভাড়া নির্ধারণ ও পরিবহন তদারকিতে যাত্রী প্রতিনিধিদের বাদ রেখে শুধুমাত্র পরিবহন মালিকদের সঙ্গে সমন্বয় করে গঠিত ভিজিলেন্স টিমের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন: ছাত্র ফেডারেশনকে লিগ্যাল নোটিশ দিল ছাত্রশিবির
মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিআরটিএ ও বিআইডাব্লিউটিএ যাত্রীদের স্বার্থ উপেক্ষা করে একতরফাভাবে পরিবহন মালিকদের সুবিধা নিশ্চিত করছে। ভাড়া নিয়ন্ত্রণের কোনো কার্যকর মনিটরিং নেই। অথচ ঈদযাত্রার সময় ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গমুখী এসি ও নন-এসি বাসে ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে উত্তরবঙ্গের রুটে বাসভাড়া দ্বিগুণ করে ফেলা হয়েছে।’
তিনি জানান, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, বগুড়া, নওগাঁ, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের যাত্রীরাও অতিরিক্ত ভাড়ার শিকার হচ্ছেন। ঢাকার সদরঘাট নৌবন্দর থেকেও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে অতিরিক্ত ভাড়ায় অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে, যা নীতিনির্ধারকদের চোখে পড়ে না। এছাড়া অভ্যন্তরীণ আকাশপথে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামগামী ফ্লাইটগুলোতে যাত্রীদের কাছ থেকে ‘ভাড়া ডাকাতি’ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: কৃষি গুচ্ছে শূন্য আসনের ফল প্রকাশের তারিখ ঘোষণা
মোজাম্মেল হক আরও বলেন, ‘বর্তমানে সড়কে চাঁদাবাজি কমলেও বাস ভাড়া কমানো হয়নি, ফলে যাত্রীরা কোনো সুফল পাচ্ছেন না। পরিবহন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে হলে যাত্রীদের মতামত উপেক্ষা না করে সকল পক্ষকে নিয়ে যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি ঈদযাত্রায় সব পথেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য এবং যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনটি মনে করে, ঈদের মতো জাতীয় উৎসবে যাত্রীদের কষ্ট না বাড়িয়ে, বরং স্বস্তি নিশ্চিত করাই হওয়া উচিত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রধান অগ্রাধিকার।