হাতিয়ার মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় উদ্ধার ৩৫, নিখোঁজ ৪, মৃত ১
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন তিনজন। তিনজনের মধ্যে রয়েছেন নারী ও শিশু।
এ ছাড়া জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৩৫ জনকে। তাদেরকে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হাতিয়া থানার ওসি একেএম আজমল হুদা জানিয়েছেন, শনিবার দুপুর ২টার দিকে হাতিয়ার ভাসান চর থেকে ৩৯ জন যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার হরণী ইউনিয়নের আলী বাজার ঘাটের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ট্রলারের যাত্রীদের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য, চারজন আনসার সদস্য, বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মী ও ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা কয়েকজন রোহিঙ্গা রোগী ছিলেন।
ট্রলারটি ভাসানচর থেকে ৭-৮ কিলোমিটার অতিক্রম করে বিকেল ৩টার দিকে হাতিয়ার করিম বাজার ঘাটের সন্নিকটে ডুবোচরের সাথে লেগে যায়। এ সময় তলা ফেটে ট্রলারটি ডুবে যায়। তাৎক্ষণিক নদীতে থাকা অন্য ট্রলারের জেলেদের কয়েকজন যাত্রীকে জীবিত এবং একজনকে মৃত উদ্ধার করা হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌ পুলিশ এবং যুব রেডক্রিসেন্ট সদস্যরা উদ্ধার কাজে যোগ দেন।
রাত ১২টা পর্যন্ত ৩৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এক রোহিঙ্গা নারীকে আশংকাজনক অবস্থায় সুবর্নচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ছাড়া আরও ৮ জনকে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন- পুলিশ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান (৫২) ও ফরহাদ (২৫), ভাসানচর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফারজানা বিনতে মমিন, রোহিঙ্গা নাগরিক ইসমত আরা (১৯), মোহাম্মদ তারেক (২৫), ফাতেমা খাতুন (৪৪), মোহাম্মদ করিম (১২) ও ভাসান চরের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোস্তাফিজর রহমান জানান, হাসপাতালে ভর্তি ৮ জনের মধ্যে পুলিশের এক এসআই, এক কনস্টেবল, একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও চারজন রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭ জনের পানিতে ডুবার কারণে একটু বুকে ব্যথা হচ্ছে; এছাড়া তাদের সার্বিক অবস্থা ভালো আছে। তবে সিনিয়র স্টাফ নার্স ফারজানা বিনতে মমিনের ফুসফুসে পানি চলে যাওয়ায় তাকে অক্সিজেন দিতে হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্য ফরহাদ বলেন, আমাদের ট্রলারটা ভালো ছিল, মাঝিও ভালো ছিল। ট্রলারটা নতুন ছিল। আমরা এই পাশের ঘাটে প্রায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। এ সময় মাঝখানে একটা চরে আমাদের ট্রলারটা আটকে যায়। চরের ওপর যখন ট্রলারটা চালানো হচ্ছিল এ সময় কয়েকটা ধাক্কা খেয়েছিল। ধাক্কা খাওয়ার পরে দেখলাম যে হঠাৎ করে ট্রলারের ভেতর থেকে পানি বের হচ্ছে। এরপর একটা ঢেউ এসে বাড়ি দেয়ার পর ট্রলারটা উল্টে যায়।
নোয়াখালী যুব রেড ক্রিসেন্টের বিভাগীয় প্রধান (প্রশাসন সংগঠন ও সদস্য সংগ্রহ বিভাগ) জোবাইর হোসেন বলেন, নিহত ব্যক্তির আনুমানিক বয়স ৪৫ বছর হবে। উনার নাম গিয়াস উদ্দিন এবং তিনি ডাক বিভাগে চাকরি করেন বলে শুনেছি। তিনি আরও বলেন, রাতে উদ্ধার কাজ সমাপ্ত করে ফায়ার সার্ভিস ও যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা ফিরে যান।