০১ জুন ২০২৫, ১১:০৫

ঈদযাত্রায় ২১০ টাকার ভাড়া ৩০০ করার অনুমোদন চান স্পিডবোট মালিকেরা

স্পিডবোট  © সংগৃহীত

পাবনার কাজিরহাট ও মানিকগঞ্জের আরিচা নৌপথে এবারের ঈদযাত্রায় ৩০০ টাকা করে ভাড়া আদায়ের অনুমোদনের দাবি জানিয়েছেন বোট মালিকরা। অনুমোদন দেওয়া না হলে স্পিডবোট বন্ধ রাখা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কাজিরহাট স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি রইস উদ্দিন বলেন, ‘ঈদযাত্রায় একপাশ থেকে যাত্রী আসেন, অন্যপাশ থেকে যাত্রীহীন খালি বোট চালাতে হয়। এতে তারা বড় ধরনের লোকসানে পড়বেন জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা বিআইডব্লিউটিএ-এর  চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন পাঠিয়েছি। তাতে বলেছি, ঈদের আগে ও পরে মিলিয়ে ঈদযাত্রায় ৩০০ টাকা করে ভাড়া আদায় ছাড়া আমাদের ব্যাপক লোকসান হবে। এক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ভাড়া আদায়ের অনুমোদন না পেলে বোট চালানো সম্ভব হবে না। ৪ জুনের পর যেকোনো সময় বোট বন্ধ করে দেয়া হবে। কারণ লোকসান গুণে তো কেউ বোট চালাবে না।’

বোট মালিক সমিতির এ নেতা আরও বলেন, ‘তিনি আরও বলেন, সাধারণ সময়ে ছোট বোটে প্রতি ট্রিপে সাড়ে তিন হাজার ও বড় বোটে চার হাজার টাকা খরচ। ১২ যাত্রী নিতে বলা হয়েছে ২১০ টাকা ভাড়ায়। তাহলে এখানে আমার লাভ হচ্ছে, নাকি লোকসান? এরপর আবার ঈদের আগে শুধু ঢাকা থেকে মানুষ আসে, যায় না। ঈদের পরে শুধু যায়, আসে না। এক্ষেত্রে এই সময় একপাশ থেকে খালি বোট চালাতে হচ্ছে। লোকসান আরও বেড়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের দাবি, শুধু ঈদযাত্রায় ৩০০ টাকা ভাড়া আদায়ের অনুমোদন দেওয়া হোক।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ- এর নগরবাড়ি-কাজিরহাট ঘাট কার্যালয়ের পোর্ট অফিসার আব্দুল ওয়াকিল বলেন, ‘২১০ টাকা ভাড়ার প্রজ্ঞাপন হলেও  স্পিডবোট মালিকেরা তা মানতে নারাজ। পরে সংবাদ প্রকাশের পর দুইপাড়ের সেনাবাহিনীর সহায়তায় ভাড়া আদায়ে সরকারের নির্দেশনা মানতে বাধ্য করা হয়। ঈদে একমুখী যাত্রী পাবেন উল্লেখ করে এখন আবার তারা লোকসানের অজুহাতে ঈদযাত্রায় ৩০০ টাকা ভাড়া দাবি করছেন।’  

তিনি আরও বলেন, ‘অনুমোদন না পেলে ২১০ টাকা-ই ভাড়া আদায় করতে হবে। অনিয়ম করলে প্রয়োজনে বোটের রুট পারমিট বাতিল করা হবে। ঈদযাত্রায় কোনো ধরনের যাত্রী ভোগান্তি মানা হবে না।’

এ বিষয়ে পাবনার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‌‘সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে আদায়ের সুযোগ নেই। ঈদযাত্রা স্বস্তির করতে ইতোমধ্যে বোট মালিক সহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি সভাও করা হয়েছে। আমরা তৎপর আছি, নিয়মের বাইরে কোনো কিছু করলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’  

প্রসঙ্গত, ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর ও সময় বাঁচানোর লক্ষ্যে ২০১৬ সালের দিকে কাজীরহাট-আরিচা নৌরুটে লঞ্চ ও ফেরির পাশাপাশি স্পিডবোট চলাচল শুরু হয়। এই নৌপথে ৪টি ফেরি ও ৯টি লঞ্চ চলাচল করে। এর সাথে কাজিরহাট ও আরিচা দুইপাড়ে বর্তমানে ১২ সিটের ১৪২টি স্পিডবোট চলে। এতে করে এক ঘণ্টারও বেশি সময়ের জলপথ পাড়ি দেওয়া যায় ১৫ থেকে ২০ মিনিটে। এ কারণে প্রতিদিন হাজারেরও অধিক মানুষ যাতায়াত করেন স্পিডবোটে।