৩০ মে ২০২৫, ১২:৪৩

শার্শায় চাহিদার তুলনায় এ বছর দেড় হাজার পশু উদ্বৃত্ত

কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে এসব গরু। শার্শার বড়আঁচড়া অ্যাগ্রো ফার্মে  © টিডিসি

আসন্ন কোরবানির ঈদ ঘিরে যশোরের শার্শা উপজেলায় চাহিদার তুলনা দেড় হাজার পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, কোরবানির জন্য প্রয়োজন ১২ হাজার ৭২৬টি পশু, প্রস্তুত রয়েছে ১৪ হাজার ২২৬টি। চাহিদার তুলনায় প্রায় ১ হাজার ৫০০ পশু বেশি থাকায় ভোক্তারা সহজে পশু সংগ্রহের সুযোগ পাচ্ছেন।

উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তপু কুমার সাহা জানান, শার্শা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে থাকা ১ হাজার ১৩১টি খামারে প্রস্তুত করা হয়েছে এসব পশু। এর মধ্যে ১৫টি বড় খামার ছাড়াও অসংখ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের খামার রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিতভাবে হাটে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, গর্ভ পরীক্ষা এবং অসুস্থ পশুর চিকিৎসা দিচ্ছি। নিষিদ্ধ কৃত্রিম মোটাতাজাকরণ রোধেও কঠোর মনিটরিং চলছে।’

উপজেলার সাতমাইল পশুহাটে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়াসহ বিভিন্ন পশু কেনা-বেচা এখন তুঙ্গে। প্রাণিসম্পদ অফিসের তত্ত্বাবধানে এই হাটে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকায় বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়ের আস্থা বেড়েছে।

আরও পড়ুন: এক শিক্ষক দুই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে, এমপিও নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ

শার্শার বড়আঁচড়া এলাকার সফল খামারি আবু তাহের জানান, তার ফার্মে দুই শতাধিক গরু রয়েছে। এর মধ্যে কোরবানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১০০টি।

তিনি বলেন, ‘আমরা এই মৌসুমে লাল শাহিয়াল (পাকিস্তানি জাত) ও ফ্রিজিয়ান জাতের গরু বাজারজাত করছি। ওজন ৫০০ থেকে ৯০০ কেজি পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত অর্ধেক গরু বিক্রি হয়ে গেছে, বাকিগুলোর চাহিদাও ভালো।’

তিনি আরও জানান, তাদের ফার্মে কোনো ধরনের কৃত্রিম মোটাতাজাকরণ করা হয় না। গরু পালনে প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

এদিকে লাউতাড়া গ্রামের আরেক খামারি আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমার খামারে কোরবানির জন্য অর্ধশত গরু প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের নিয়মিত পরামর্শ ও চিকিৎসা সহযোগিতায় আমরা ভালো ফল পাচ্ছি।’

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তপু কুমার সাহা বলেন, প্রতিটি কৃষক যদি বছরে ১-২টি করে গরু পালন করেন, তাহলে কোরবানির মৌসুমে ভারত বা অন্য কোনো দেশ থেকে পশু আমদানির প্রয়োজন হবে না। বরং স্থানীয়ভাবে চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো যাবে।

আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে যেসব চুক্তি হলো

তিনি আরও বলেন, ‘ফ্রিজিয়ান জাতের গরু পালনে কম সময়ে বেশি দুধ ও মাংস পাওয়া যায়। আমরা কৃষক পর্যায়ে বিনামূল্যে কৃমিনাশক ও ভ্যাকসিন সরবরাহ করছি।’

সরকারি সহায়তা, খামারিদের উদ্যম ও বাজারে স্থিতিশীলতা—সব মিলিয়ে শার্শা উপজেলায় এবার কোরবানির পশু নিয়ে স্বস্তি দেখা দিয়েছে খামারি ও ক্রেতা উভয়ের মধ্যেই।