৩০ মে ২০২৫, ১০:৫৭

ফেনীতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত, দুর্ভোগে নিম্ন আয়ের মানুষ

ফেনীতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত  © টিডিসি ছবি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে ফেনী জেলায়। এর প্রভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে একদিনে সর্বোচ্চ। শুক্রবার (৩০ মে) সকালে ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ বৃষ্টিপাত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে আগামীকাল পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ইঙ্গিত রয়েছে।

এদিকে, ভারী বৃষ্টিপাতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ফেনী জেলার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষজন। বিশেষ করে রিকশাচালক, মুচি, ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা, দিনমজুর ও হকারদের জীবনযাপন হয়ে পড়েছে দুঃসাধ্য। 

আজ শুক্রবার (৩০ মে) সকালে শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিতে নানাভাবে ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। পরিবহন চালক, ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী ও দিনমজুরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টির কারণে তাদের আয় ব্যাপকভাবে কমে গেছে। 

একাধিক শ্রমজীবী জানান, টানা বৃষ্টির ফলে শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, ফলে সাধারণ মানুষের চলাচল কমে গেছে। এতে তাদের পণ্য বিক্রি কিংবা যাত্রী কমে গেছে। অনেকেই বলেন, আয় কমে যাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে চলা কঠিন হয়ে পড়েছে।

শহরের ট্রাংক রোডের মুচি সাদেক মিয়া বলেন, আমি ফুটপাতে বসে জুতা সেলাই করি। বৃষ্টিতে জায়গাটায় পানি জমে গেছে, বসার উপায় নেই। কালকে পুরো দিন ধরে কোনো কাজই করতে পারিনি বৃষ্টির কারণে। এমন টানা বৃষ্টি হলে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষজনের সংসার কীভাবে চলবে।

ফল ব্যবসায়ী জাবেদ বলেন, বৃষ্টির কারণে দোকানে কাস্টমার কম। একপাশে বৃষ্টি অন্য পাশে ফলগুলো পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সব মিলিয়ে শোচনীয় অবস্থা আমাদের মতো খেটে খাওয়া মানুষদের।

রিকশাচালক গফুর মিঞা বলেন, গতকাল থেকে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে রিকশা চালানো তো দূরে থাক ঘর থেকে বের হতে পারছি না। ঘরে বসে থাকলে তো পেট চলবে না। তাই আজকে রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। তবে, বৃষ্টির কারণে রাস্তায় মানুষের আনাগোনা কম। স্বাভাবিক দিনে ৮০০-১০০০ টাকা আয় হলেও এখন ২০০ টাকা আয় করতে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 

একই সুরে কথা বলেন শাহ আলম নামের আরেক রিকশাচালক। তিনি বলেন, যাত্রী নেই রাস্তায়। থাকলেও আগের তুলনায় কম।

ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতা রুবেল হাসান বলেন, আমি ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করি। বৃষ্টির কারণে বের হতে পারছি না, রাস্তায় পানি আর কাদা। সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিক্রি না হলে ঘরে টাকা আসে না।