ইমামকে রাজকীয় বিদায়, ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের একটি মসজিদে ৩৪ বছর ইমামতি করেন মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান। গ্রামবাসী ভালোবেসে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে, ফুল ছিটিয়ে তাকে রাজকীয় বিদায় জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে এককালীন পেনশন হিসেবে দেওয়া হয় ৯ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের নতুন কহেলা জামে মসজিদের ইমাম ও খতীবকে এই রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তার বিদায় সফরে সঙ্গী হিসেবে যুক্ত হয় অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল। এই রাজকীয় বিদায় অনুষ্ঠান দেখতে ভিড় করেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ১৯৯১ সালে ৬০০ টাকা বেতনে নতুন কহেলা জামে মসজিদে ইমাম হিবেসে যোগদান করেন মাওলানা মোহাম্দ শাহজাহান খান। বিদায়ের প্রাক্কালে ইমামের বেতন হয় ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান ঢাকার লালবাগের একটি মাদরাসা থেকে মাওলানা পাস করেন। তার এই দীর্ঘ ইমামতি পেশায় এলাকায় ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি অসংখ্য মানুষকে কুরআনের শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি জানাজা পড়িয়েছেন হাজারের অধিক মানুষের। গ্রামের মানুষ নানা ধরনের উপহার দিয়েও তাকে বিদায় জানান। তার বিদায়ী সফর সঙ্গী হয়ে এই গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক মানুষ ৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ইমামের নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন। ইমামকে এমন বিদায় জানাতে পেরে খুশি নতুন কহেলা গ্রামবাসীরাও।
নতুন কহেলা গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাশেম খান বলেন, ইমান মাওলানা মো. শাজাহান খান তার চাকরি জীবনে গ্রামের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এই ইমামের প্রতি যে গ্রামবাসীর ভালোবাসা তা জনস্রোতেই বোঝা যায়। আমরা গ্রামবাসী একজন উঁচু মানের ইমামকে হারালাম।
বিদায়ী ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ শাজাহান খান বলেন, আমি গ্রামের প্রায় দেড় হাজার মানুষের জানাজা পড়িয়েছি। ৬শ জনকে কোরআন শিক্ষা দিয়েছি। আল্লাহর রহমতে আমি কাজগুলো করতে পেরে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার বিদায়বেলায় এলাকার মানুষ এত বড় আয়োজন করেছে তার জন্য এলাকার মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি সেলিম খান বলেন, এমন বিদায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি এলাকার মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। ইমামের পরবর্তী জীবন ভালো কাটতে সরকারি চাকরির মতো পেনশন দেওয়া হয়েছে। তার সর্বদা মঙ্গল কামনা করছি।