রাজাপুরে দৃষ্টিনন্দন হাজিবাড়ি জামে মসজিদ, নান্দনিকতার ছোঁয়ায় অপূর্ব স্থাপত্য
- মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি
- প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৫, ১১:৪১ AM , আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫, ১১:৪১ AM

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় কানুদাসকাঠিতে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন মনিরা হারুন জামে মসজিদ, যা স্থানীয়ভাবে হাজিবাড়ি মসজিদ নামে পরিচিত। এখন দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। অপূর্ব স্থাপত্যশৈলী ও নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের কারণে মসজিদটি শুধু স্থানীয় মুসল্লিদেরই নয়, দূরদূরান্তের মানুষকেও মুগ্ধ করছে।
সাবেক সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের বাবা ১৯৮১ সালে প্রথমে এই মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। এরপর ২০২১ সালে বজলুল হক হারুন নিজ অর্থায়নে এটিকে নতুন করে পুনর্নির্মাণ করেন, যেখানে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলীর ছোঁয়া দেওয়া হয়। মসজিদের ছাঁদে একই সাইজের চারপাশে চারটি ও মাঝে বড় একটি গম্বুজ ও দুটি মিনার আছে।
মসজিদটি অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিকভাবে অত্যন্ত মনোরম ও আকর্ষণীয়। এর সুসজ্জিত গম্বুজ, সুদৃশ্য মিনার ও কারুকার্যময় খোদাই কাজ দর্শকদের মন কাড়ে। মসজিদের নকশায় আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে, যা একে অন্যান্য মসজিদের তুলনায় অনন্য করে তুলেছে। নির্মাণের পর থেকেই মসজিদটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রতিদিন এখানে বহু দর্শনার্থী আসছেন, শুধু নামাজ আদায়ের জন্যই নয়, বরং মসজিদটির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতেও। অনেকেই বলছেন, এটি এলাকার অন্যতম নান্দনিক মসজিদ এবং এখানে প্রবেশ করলেই হৃদয়ে প্রশান্তি অনুভূত হয়।
হাজিবাড়ি মসজিদের ফটক
স্থানীয় মুসল্লিরা জানান, পুরোনো মসজিদটি ছোট হওয়ায় নামাজ আদায়ে অসুবিধা হতো। নতুন এই মসজিদ নির্মাণের ফলে এখন স্বাচ্ছন্দ্যে নামাজ আদায় করা সম্ভব হচ্ছে, আর বাইরে থেকেও বহু মানুষ এখানে এসে নামাজ আদায় করছেন।
স্থানীয় মুসল্লি মো. সিদ্দিক মুনশি বলেন, ‘আগের মসজিদটি ছোট ছিল, জায়গা সংকুলান হতো না। এখন আল্লাহর রহমতে সুন্দর ও প্রশস্ত মসজিদ পেয়েছি। অনেক দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষ এখানে আসেন।’
দর্শনার্থী মাহিন খান রোমান বলেন, ‘আমি ফেসবুকে দেখে এখানে এসেছি। সত্যিই মসজিদটি অসাধারণ! এত সুন্দর মসজিদ আগে দেখিখি। এখানে এলে একধরনের মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়।’
মনিরা হারুন জামে মসজিদ। যা হাজিবাড়ি মসজিদ নামে পরিচিত
মসজিদের সভাপতি মাওলানা মোস্তাকিম বিল্লাহ বলেন, বুলবুলে পাকিস্তান মরহুম মাওলানা আবদুর রব প্রথম মসজিদটি নির্মাণ করেন। তিনি নিজের বাড়িতে বিল্ডিং ঘর তৈরি না করে এই জামে মসজিদ তৈরি করেছেন। এটি পরিসরে ছোট থাকায় পরবর্তী সময়ে তার ছেলে ২০২১ সালে বাবার মসজিদটি সুন্দর দৃষ্টিনন্দন মানুষের কাছে আকর্ষণীয়ভাবে পূর্ণ নির্মাণ করেন। মসজিদটি দক্ষিণ অঞ্চলের অন্যান্য ইসলামি স্থাপত্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। মসজিদটি সুন্দর সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হওয়ায় স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি দূরদূরন্ত মানুষ এসে জুমার নামাজ আদায় করেন।
ঝালকাঠির মনিরা হারুন জামে মসজিদ শুধু একটি উপাসনালয় নয়, এটি স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শনও বটে। ধর্মীয় গুরুত্বের পাশাপাশি এর নান্দনিক রূপও মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে। যারা সৌন্দর্য ও প্রশান্তির সন্ধানে আছেন, তাদের জন্য এই মসজিদ অবশ্যই এক দর্শনীয় স্থান।