শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করতে চালু হচ্ছে অটোমেশন পদ্ধতি
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিতে ভোগান্তি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী, সব শিক্ষক এমপিওভুক্ত হবেন অটোমেশন পদ্ধতিতে। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী এ ধরনের আভাস দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এনটিআরসিএর মাধ্যমে একজন শিক্ষক নিয়োগ পেয়ে যেন কোনোভাবেই ভোগান্তির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করা হবে। এমপিওভুক্ত হতে স্কুল থেকে শুরু করে শিক্ষা অধিদফতর পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে ফাইল নিষ্পত্তিতে যেন বিলম্ব না হয়, কর্মকর্তারা যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফাইলের কাজ শেষ করেন, সে বিষয়ে বাধ্য করা হবে তাদের।
এতে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত হবে। এ ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা যদি কালক্ষেপণ করেন, তবে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। এতে শিক্ষকদের ভোগান্তি কমে আসবে। সম্প্রতি এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া কীভাবে আরো সহজ করা যায়, সেটি নিয়ে কাজ করব। অটোমেশন করার কথা ভাবছি।
শিক্ষকেরা বলছেন, এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ পেয়ে এমপিওভুক্ত হতে বিভিন্ন স্থানে টাকা দিতে হয়। একজন শিক্ষককে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পর্যন্ত পাঁচ থেকে ছয়টি ধাপে আবেদন পৌঁছাতে হয় এমপিওর। এ জন্য তাদের ১০ হাজার থেকে ক্ষেত্রবিশেষে লাখ টাকাও দিতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
আরো পড়ুন: শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘যৌন হয়রানির’ গল্প সাজান ছাত্রলীগ নেতাসহ বহিষ্কৃতরা
শুধু টাকাই নয়, সময়ও লাগে অন্তত তিন মাস থেকে ১৩ মাস পর্যন্ত। এর মধ্যে বেশি সময় লাগে ফাইল নিয়ে।এতে নানাবিধ সমস্যায় তীব্র ভোগান্তির শিকার হতে হয় এমপিওপ্রত্যাশী শিক্ষকদের।
শিক্ষকদের অভিযোগ, ২০১৫ সালে সারা দেশের এমপিও ব্যবস্থা ৯টি আঞ্চলিক কার্যালয়ে বিকেন্দ্রীকরণ করার পর হয়রানি, ঘুষ লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। এক জায়গার দুর্নীতি ৯ জায়গায় পাঠানো হয়েছে। এমপিও পেতে একই কাগজ বারবার যাচাই-বাছাইয়ের নামে হয়রানির শিকার হতে হয় শিক্ষকদের। টাকা না দিলে সমস্যার সমাধান হয় না।
এভাবে অবৈধ লেনদেন হওয়ার প্রমাণ মিলেছে ২০১৭ সালে মাউশির একটি তদন্ত কমিটিতে। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও রংপুর অঞ্চলের কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিওভুক্তি নিয়ে অভিযোগ তদন্তে এটি উঠে আসে।
গত সেপ্টেম্বরে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় জানা যায়, চারটি স্থানে এমপিওভুক্ত হতে ‘হাদিয়া বা সম্মানী’ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আবেদনকারী শিক্ষকের সঙ্গে প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষ চুক্তি করেন। এ ছাড়া নিয়মবহির্ভূত টাকার বিনিময়ে এমপিওভুক্তির অভিযোগ রয়েছে।
আরো জানানো হয়েছে, পাঁচ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয় এমপিওভুক্তিতে। মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ টাকা নেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে।