মৎস্যবিজ্ঞান স্নাতকদের নিয়োগে হাইকোর্টের রুল
মৎস্য অধিদপ্তরে কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা, ২০২০ অনুযায়ী মৎস্যবিজ্ঞান স্নাতক ডিগ্রিধারীদের চাকরির ক্ষেত্রে আবেদনের সুযোগ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ও সংশ্লিষ্ট পাঁচজনকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদেশের বিষয়টি জাগোনিউজকে নিশ্চিত করেছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।
এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে এদিন রিটকারীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। তাকে সহযোগিতা করেন মো. মনিরুল ইসলাম রাহুল ও মো. সোহরাওয়ার্দী সাদ্দাম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ মোহাম্মদ রাসেল চৌধুরী।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জানান, মৎস্য অধিদপ্তরে কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা, ২০২০-এর তফসিল-১-এর ক্রমিক নং ৭৪, ৭৫, ৭৬, ৭৭, ৭৮, ৭৯, ৮০ ও ৮৫ সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মৎস্যবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের তত্ত্বাবধায়ক পরিদর্শক, সহকারী হ্যাচারি কর্মকর্তা, সহকারী সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ও মৎস্য জরিপ কর্মকর্তাসহ আটটি পদে চাকরির আবেদনের সুযোগ না রাখায় বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হতে মৎস্যবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রিধারী ২১ জন চাকরিপ্রার্থী একটি রিট করেন।
তিনি বলেন, মৎস্যবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের তত্ত্বাবধায়ক পরিদর্শক, সহকারী হ্যাচারি কর্মকর্তা, সহকারী সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ও মৎস্য জরিপ কর্মকর্তাসহ আট পদে চাকরির আবেদনের সুযোগ ব্যতিত মৎস্য অধিদপ্তরে কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা, ২০২০ প্রণয়ন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং মৎস্যবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের এসব পদে আবেদনের সুযোগ তৈরিকরণের নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রিটকারীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের ২৪ মার্চ মৎস্য অধিদপ্তরে কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা, ২০২০ প্রণয়ন করেন। কিন্তু আইনের তফসিল-১-এর ক্রমিক নং ৭৪, ৭৫, ৭৬, ৭৭, ৭৮, ৭৯, ৮০ ও ৮৫ এ সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাণিবিদ্যা ও মৎস্য ডিপ্লোমাধারীদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হলেও মৎস্যবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের আবেদনের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। ২৩ ডিসেম্বর মৎস্য অধিদপ্তরে কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা, ২০২০ অনুযায়ী বাংলাদেশ কর্ম কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত দশম গ্রেডের মৎস্যবিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। সেখানে প্রাণিবিদ্যা ও মৎস্য ডিপ্লোমাধারীদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হলেও মৎস্যবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের আবেদনের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি বিজ্ঞাপিত নিয়োগে এ নিয়োগবিধি অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক পরিদর্শক, সহকারী হ্যাচারি কর্মকর্তা, সহকারী সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা ও মৎস্য জরিপ কর্মকর্তা পদের বিপরীতে মোট ২০১টি শূন্যপদে এ বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিধি অনুযায়ী দশম গ্রেডভুক্ত ১১টি পদে এমন অসামঞ্জস্য নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে, যা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
এদিকে, সংশ্লিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী নবম গ্রেডের ২৫টি পদে মৎস্য স্নাতকদের পাশাপাশি প্রাণিবিদ্যায় স্নাতকদেরও আবেদনের যোগ্যতা দেওয়া হয়েছে। মৎস্য ডিপ্লোমাধারীদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হলেও মৎস্যবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের আবেদনের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। এ কারণে এ রিট করা হয়।
রিট পিটিশনাররা হলেন- মো. হাসান মাহমুদ নূর, তাসলিমা আক্তার, সজীব সাহা, মো. আব্দুল কাদের, জিহাদ হোসেন, মো. রোহান ইসলাম, চয়ন বিশ্বাস, মো. জাহিদ হোসেন, সামিহা হায়দার রোজা এবং আতিক-উজ-জামানসহ ২১ জন।