একই দিনে একাধিক পরীক্ষা, ভোগান্তিতে চাকরিপ্রার্থীরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২১, ১০:০৯ AM , আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২১, ১০:০৯ AM
আগামী শুক্রবার (৮ অক্টোবর) ৫টি নিয়োগ পরীক্ষা রয়েছে চাকরিপ্রার্থী ইব্রাহিম খলিলের। একইদিনে একাধিক পরীক্ষা থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এই চাকরিপ্রার্থী। ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, “এইদিনে একাধিক পরীক্ষা বেকারদের সাথে তামাশা করার নামান্তর”। শুধু খলিল নয়, একই দিনে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একাধিক পরীক্ষা থাকায় আর্থিক ক্ষতি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন লাখ লাখ চাকরিপ্রার্থী।
রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব নিয়োগ পরীক্ষাগুলো সপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে নেওয়া হয়। তবে কিছু কিছু পরীক্ষা শনিবারও নেওয়া হয়ে থাকে। চাকরিপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, নিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে তাদের সময় ও অর্থ দুটোই নষ্ট হচ্ছে।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ২১টি নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই সময়ে একাধিক পরীক্ষার আয়োজন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
এদিকে আগামী ৮ অক্টোবরও (শুক্রবার) রয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স, বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (বিসিএসআইআর), সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ (সিএএবি), বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল), বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, এবং বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডসহ আরও কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষা।
তিতাস গ্যাসের মহাব্যবস্থাপক মুনির হোসেন খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) নিয়োগ পরীক্ষা পরিচালনা করবে। করোনার কারণে একবার পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিলো, তখন তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছিল। এখন আইবিএকে নিয়োগ পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বলা সম্ভব না।
বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের ডিজিএম (এইচআর) মো বিল্লাল হোসেন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ এবং বুয়েটের কাছে পরীক্ষাটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। ৮৪ জন কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
আইবিএর পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জানান, নিয়োগকারীদের সুপারিশ অনুযায়ী তারা পরীক্ষা চালায় বলে তাদের কিছুই করার নেই।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী (২০১৭), দেশের ৬ কোটি ৩৫ কোটি কর্মীর মধ্যে ৬ কোটি ৮ লাখ কর্মী বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত ছিল। যার অর্থ বেকারত্বের হার ছিল ৪.২ শতাংশ বা ২৭ লাখ।
কোভিড-১৯ কারণে বেকারত্বের পরিস্থিতি মারাত্মক হয়ে উঠেছিল। কারণ অনেক লোক তাদের চাকরি হারিয়েছিল এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও কম তৈরি হয়েছিল। ২০২১ সালে একটি আইএলও রিপোর্টে দেখা গেছে, বাংলাদেশের বেকারত্বের হার গত বছর ৫.৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। যা ২০১৯ সালে ৪.২ শতাংশ ছিল।
চাকরিপ্রার্থী আল মামুন বলেন, পরীক্ষা আয়োজনের ক্ষেত্রে সমন্বয় থাকা উচিত ছিল। সমন্বয়হীনতার কারণে টাকা খরচ করে ঢাকায় এসেও সব পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছি না। প্রতিষ্ঠানগুলোর অব্যবস্থাপনা এখন আমার আশা ভেঙে দিচ্ছে।