সরকারি চাকরিতে বয়স ছাড়, শঙ্কা দেখছেন বিশিষ্টজনরা
চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য সরকারি চাকরিতে ২১ মাস ছাড় নিয়ে শঙ্কা থাকছেন বলে জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। করোনায় শূন্যপদ পূরনে নিয়োগের গতি আনতেই এমন ব্যবস্থা বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগেও বিভিন্ন সময় নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে নিয়োগে গতি আনতে বলা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। তাই প্রতি বছর সাড়ে তিন থেকে চার লাখ পদ শূন্য থাকছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সরকারি কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। এ মন্ত্রণালয় থেকে প্রতি বছর ‘স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসারর্স অ্যান্ড স্টাফস’ শীর্ষক মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরভিত্তিক পরিসংখ্যান বের হয়। ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণ প্রশাসনে সরকারি কর্মচারীর শূন্য পদের সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৮১ হাজার।
বিশিষ্টজনদের মতে, করোনার কারণে এবার শূন্য পদের সংখ্যা বেড়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে নতুন নতুন দপ্তর-সংস্থা হচ্ছে। কিন্তু শূন্য পদ পূরণ হচ্ছে না। জনপ্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে, ৩১ ডিসেম্বর সরকার ঘোষিত বয়স ছাড়ের সুযোগ পাবে না চাকরি প্রত্যাশীরা।
এক্ষেত্রে সরকারি শূন্য পদ পূরণের ক্ষেত্রে বড় বাধা হিসাবে সরকারি কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাবকেই দায়ী করছেন অনেকে। তাদের মতে, সরকারি নিয়োগে মন্ত্রী, এমপি থেকে শুরু করে সচিবরা নিজেদের লোক নেওয়ার প্রতিযোগিতা করেন। এ কারণে দপ্তর-সংস্থার প্রধানরা সহজে নিয়োগ কার্যক্রমে হাত দিতে চান। এছাড়া মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সচিব ও ডিজিরা চাকরির শেষ সময়ে এসে নিয়োগের কার্যক্রমে হাত দিতে চান না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, সরকারি চাকরিতে ঢোকার পর সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর অবসরের তারিখ নির্ধারিত হয়ে যায়। তাই প্রত্যেকটি দপ্তরই কোনো বছর তাদের কতজন কর্মচারী অবসরে যাবেন তা সহজেই জানেন। সদিচ্ছা থাকলে অবসরে যাওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট বছরের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও পরীক্ষার কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব।
যাদের বয়স ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তারিখে ৩০ বছর পার হয়ে গেছে তারা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিসিএস ছাড়া প্রকাশিতব্য সব চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবেন। এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে ২ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে তাদের আওতাধীন সব দপ্তর-সংস্থায় দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সরকার ঘোষিত ২১ মাসের বয়স ছাড়ের বিষয়টি উল্লেখ করে ডিসেম্বরের মধ্যে দ্রুত সরকারি শূন্য পদ পূরণের করতে হবে।