শূন্যপদ পূরণে শীঘ্রই আসছে বেশ কয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষা
করোনা মহামারির ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বন্ধ ছিল নিয়োগ প্রক্রিয়া। যার ফলে সরকারি চাকরিতে বর্তমানে কয়েক লাখ শূন্য পদ তৈরি হয়েছে। এসব পদ পূরণে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বেশকিছু নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার ও গবেষণা অনুবিভাগের পরিসংখ্যান ও গবেষণা কোষের ‘স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস-২০২০’ বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৬৮টি পদ রয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে তিন লাখ ৮০ হাজার ৯৫৫টি পদ শূন্য রয়েছে।
৪৬ হাজার ৬০৩টি প্রথম শ্রেণির এবং ৩৯ হাজার ২৮টি দ্বিতীয় শ্রেণির পদ শূন্য রয়েছে বলে ‘স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস-২০২০’ বই বিশ্লেষণ করে জানা গেছে। তৃতীয় শ্রেণির শূন্য পদ রয়েছে এক লাখ ৯৫ হাজার ৯০২টি। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শূন্যপদ রয়েছে চতুর্থ শ্রেণির পদে। এ শ্রেণিতে ৯৯ হাজার ৪২২টি পদ শূন্য রয়েছে।
মন্ত্রণালয় ও বিভাগ পর্যায়ে ১৭ হাজার ৭৩৯টি পদের মধ্যে শূন্য পাঁচ হাজার ৬৮টি, সংস্থা ও অধিদফতর পর্যায়ে ১৪ লাখ ৯ হাজার ৬২৬টি পদের মধ্যে শূন্য দুই লাখ ৩৩ হাজার ৩৩৬টি।
এছাড়া বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অফিসে মোট ৪৭ হাজার ৩৩টি পদের বিপরীতে শূন্য রয়েছে ১৪ হাজার ৮৫১টি পদ।
সরকারের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, করোনার কারণে দীর্ঘ সময় নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ ছিল। এজন্য শূন্য পদ কমানো যায়নি। তবে এসব পদ পূরণে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যে মাঠ প্রশাসন, স্বাস্থ্য খাতসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে জনবল নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, যতদ্রুত সম্ভব শূন্য পদ পূরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু করোনা এসে যাওয়ার কারণে সবকিছু তো বন্ধ হয়ে গেল। মূলত করোনার ওঠা-নামার জন্য আমরা নিয়োগ পরীক্ষা নিতে পারিনি।
তিনি বলেন, এখন যেহেতু অবস্থা কিছুটা ভালো আছে, আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে বেশকিছু নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে নেব। ধাপে-ধাপে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টেই লোক নেওয়া হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা এখন চেষ্টা করছি, বিভিন্ন পর্যায়ের কাজ রেডি করে রাখা, ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষাগুলো যথাযথভাবে নিতে হবে।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর হলেও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩২ বছর। তবে করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি চাকরি প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ২১ মাস ছাড় দিয়েছে সরকার।
মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিতব্য বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা গত বছরের ২৫ মার্চ নির্ধারণ করার জন্য গত ১৯ আগস্ট নির্দেশনা দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যাদের বয়স ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছিল তারা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জারি করা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের যোগ্য হবেন। বয়সসীমা ছাড়ের ইস্যুতে ইতোমধ্যে শূন্যপদ দ্রুত পূরণের নির্দেশনা দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গত বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে এ নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।