লকডাউনেও নিবন্ধন করতে ডেকে ভাইভা পেছাচ্ছে বার কাউন্সিল
করোনা লকডাউনের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষার জন্য গত বছর অনুত্তীর্ণ শতাধিক বার কাউন্সিল পরীক্ষার্থীদেরকে ফরম পূরণের জন্য ১১ জুলাই ডেকে আনলেও তারা কেউই নিবন্ধন করতে পারেনি। পরে ২৫ জুলাই এই পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও তা পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়।
গত বছর মৌখিক পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ আড়াই'শর মতো পরীক্ষার্থীকে আবার নিবন্ধনের জন্য রোববার ডাকা হয় বার কাউন্সিলে। কিন্তু যান চলাচল বন্ধ থাকার কারণে ঢাকার বাইরে থেকে অনেকেই আসতে পারেননি। যান চলাচল বন্ধ থাকা অবস্থায় নানা হয়রানির মধ্যে বার কাউন্সিলে যেয়ে পরীক্ষার্থীরা ব্যাংক ও বিভিন্ন শাখা বন্ধ পান। আর এতে পরীক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে মৌখিক পরীক্ষা পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বার কাউন্সিলের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ফরম ফিলাপের জন্য বাসা থেকে বের হওয়া এক ভুক্তভোগী জানান, ওই দিন রামপুরা বাসা থেকে সকালে বের হন তিনি। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় রিকসায় করে পুলিশের তল্লাশিচৌকি পেরিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় তিনি রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় কাউন্সিল ভবনে পৌছান।
তবে এত কষ্ট করে বার কাউন্সিলে যেয়েও দেখেন শাটডাউনের কারণে শুক্র ও শনিবারের পাশাপাশি ব্যাংক রোববারও বন্ধ রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ কারণে টাকা জমা দেয়া যায়নি, ফরমও পূরণও হয়নি। এমন অভিজ্ঞতা শতাধিক পরীক্ষার্থীর। আর ঢাকার বাইরে অনেকে এসে পৌঁছাতেই পারেনি।
ওই দিনের পরে রাতে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানান, তারা ফরম পূরণ পিছিয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করেছেন।
মৌখিক পরীক্ষা কবে নেয়া হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ওইটা আমরা এখনও ঠিক করিনি। পরিস্থিতি দেখে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
তবে এ বিষয়ে অফিস আদেশ এখনও জারি হয়নি।
পরে তার নামে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, ‘এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে, হাইকোর্ট পারমিশন বিভাগের ফরম ফিলাম এবং অ্যাডভোকেটশিপ তালিকাভুক্তির কার্যক্রমের জন্য সীমিত আকারে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অফিস খোলা হইলেও করোনা মহামারির কারণে সরকার ঘোষিত লকডাউনের জন্য পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অফিস কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। উল্লেখ্য, হাইকোর্ট পারমিশন বিভাগের ফরম ফিলাপ ৩১ আগস্ট ২০২১ ইং পর্যন্ত অনলাইনে চলমান থাকিবে।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম সোহেল এই সময়ে বার কাউন্সিলের পরীক্ষা নেয়া আর ফরম পূরণের জন্য ডাকাকে দুর্ভাগ্যজনক বলেছেন। তিনি বলেন, ‘এখন পঞ্চগড় থেকে একজন কীভাবে আসবে? সড়কে গাড়ি বন্ধ, লঞ্চ বন্ধ, ফেরি বন্ধ। এ অবস্থায় বার কাউন্সিল পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তো মনে হয় না।’
বার কাউন্সিল পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী, আইনজীবীদের সনদ পেতে নৈর্ব্যক্তিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। আবার ওই তিন ধাপের যে কোনো একটি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা একবার উত্তীর্ণ হলে পরবর্তী পরীক্ষায় তারা দ্বিতীয়বার অংশ নেয়ার সুযোগ পান। এমসিকিউ পাসের পর লিখিত পরীক্ষায় ফেল করলে পরেরবার তিনি এমসিকিউ ছাড়াই লিখিত পরীক্ষায় বসতে পারেন। আবার কেউ ভাইভায় ফেল করলে পরেরবার তিনি লিখিত না দিয়েই আবার মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন।