নিয়োগ পরীক্ষা না দিয়েই চাকরির বয়স শেষ হচ্ছে অনেকের

নিয়োগ পরীক্ষা না দিয়েই চাকরির বয়স শেষ হচ্ছে
নিয়োগ পরীক্ষা না দিয়েই চাকরির বয়স শেষ হচ্ছে   © সংগৃহীত

করোনা মহামারির কারণে অনেক চাকরিপ্রার্থীই কোনো চাকরি জোগাড় করতে পারেনি। আবার অনেকের আবেদনের বয়সসীমাও শেষ হয়ে গেছে। এখন তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। এছাড়া প্রায় দেড় বছর ঠিক মত নিয়োগ পরীক্ষা হয় না বলেও তারা জানিয়েছেন। এইভাবে অনেকের চাকরি বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে চাকরিপ্রার্থীদের একটি বড় অংশ সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ করার দাবিতে ফেসবুকভিত্তিক সংগঠন ‘সরকারি চাকরি প্রত্যাশী যুব প্রজন্মের’ ব্যানারে আন্দোলন করছে। এছাড়া ৩৫ বছর করার দাবিতেও আলাদা আন্দোলন করছে চাকরিপ্রার্থীরা ।

করোনাকালে যাদের বয়স শেষ হয়েছে, তাদের ক্ষতি পোষাতে ব্যাকডেটে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হবে বলা হলেও চলতি বছরের শুরুতে ব্যাকডেটে আবেদন করার সুযোগ রাখা হয়নি বলে দাবি করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এছাড়া এখন যারা অনার্স বা মাস্টার্স শেষ করার অপেক্ষায় রয়েছেন, তাদেরও জীবন থেকে দেড় বছর হারিয়ে গেল।

এই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থী তবিবুর রহমান জানান, করোনাকালে নিয়োগ পরীক্ষা হয় না। এদিকে অল্প কিছুদিনের জন্য ৪৩তম বিসিএসে পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারেননি। এছাড়া গত বছরের জুলাই পর্যন্ত তিনি চার-পাঁচটা চাকরিতে ব্যাকডেটে আবেদন করেছিলেন। তবে, ২০২১ সালের শুরু থেকে ব্যাকডেটে আর কোনো চাকরির আবেদনের সুযোগ পাননি।

ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী জুয়েল রানা বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে চাকরির সার্কুলার ঠিক মত হয়নি। আমার মতো অনেকের চাকরির বয়সও শেষ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যদি সেই চাকরিগুলোর সার্কুলার দেওয়া হয়, তাহলে আমি কেন বঞ্চিত হব। এখানে আমার তো কোনো দোষ নেই। তাছাড়া নিয়োগ পরীক্ষা না হওয়ার কারণে অনেক নতুন সার্কুলার আসছে না।

এদিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ না করলেও সমস্যা হবে না। ব্যাকডেটে আবেদনের সুযোগ দেবেন। তবে, ঈদের পর পর্যন্ত তিন-চারটা (তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির) চাকরির সার্কুলার হলেও সেগুলোতে ব্যাকডেটে আবেদনের কোনো অপশন ছিল না।

২০১৭ সালে বাংলাদেশে সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপে বলা হয়েছে, দেশে মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী রয়েছে ছয় কোটি ৩৫ লাখ। আর তাদের মধ্যে কাজ করেন ছয় কোটি আট লাখ নারী-পুরুষ। অর্থাৎ ২৭ লাখ মানুষ কোনো কাজ করেন না, তারা বেকার।

জানা যায়, বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ৪১ তম বিসিএস পরীক্ষা দেরিত হয়েছিল এবং ফলাফল ঘোষণা করেতেও বেশ সময় নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। আবার ৪৩ তম বিসিএসের আবেদন দফায় দফায় পেছানো হচ্ছে।  প্রার্থীদের দাবি, এসব কারণে ৪৪ তম বিসিএস পেতে অনেক সময় লাগবে।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকেই প্রায় দশ হাজার আসনের পরীক্ষা আটকে আছে। এছাড়া দুদকের ভাইভা, এনএসআই নিয়োগ পরীক্ষা, গ্যাস ফিল্ডগুলোর পরীক্ষা ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা করোনা কারণে বন্ধ রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ