২৫ জুন থেকে লাগাতার অবস্থানের ঘোষণা ৩৫ প্রত্যাশীদের
সর্বশেষ ১৯৯১ সালে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হয়। এরপর অবসরের বয়স বাড়ানো হলেও প্রবেশের বয়স আর বাড়েনি। বেকারত্ব বেড়ে যাওয়া, সেশনজট, নিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা, অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। তবে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়নি সরকার।
এমনই প্রেক্ষাপটে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে ৩৫ করার দাবি জানিয়েছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। আজ মঙ্গলবার (৮ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি’- এর ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান।
দাবি বাস্তবায়নে তারা সরকারকে ২০ জুন পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়েছে। দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী ২৫ জুন বিকাল ৩টা থেকে তারা রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে অবস্থান করার ঘোষণা দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জোবায়ের আহমেদ। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নির্বাচনীয় ইশতেহারে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর আঙ্গীকার করা হলেও দুর্ভাগ্যের বিষয় বর্তমান সরকার সেটি বাস্তবায়ন করছেন না।
চাকরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীরা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে আড়াই বছরের সেশনজটের বোঝা পড়েছে শিক্ষার্থীদের ওপর৷ সেশনজটের কারণে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত যেন নষ্ট হয়ে না যায়, সেজন্য চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার দাবি জানাচ্ছেন তারা।
তারা বলেন, সরকার যদি ২০ জুন এর মধ্যে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ দাবি বাস্তবায়ন না করে তাহলে ২৫ জুন বিকেল থেকে শাহবাগ চত্তরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করব, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।
চাকরিপ্রত্যাশীরা আরও বলেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০, এই গন্ডি, দেওয়াল, সীমানা প্রাচীর, অবরুদ্ধ করে রেখেছে বাংলার লক্ষ কোটি ছাত্র সমাজকে। তারা আজ নিজেদের যোগ্যতা প্রমানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত, ছাত্রসমাজ আজ দিশেহারা কর্মহীনতার মৃত্যু যন্ত্রানায় ছটপট করছে।
তারা বলেন, মঞ্জুরী কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৬ সাল পর্যন্ত গড় সেশনজট ছিল ৩ বছর ২ দিন, ২০১৬ পর থেকে সেশনজট কমে আসলেও বর্তমানে মহামারির কারনে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীরা প্রায় আড়াই বছরের সেশনজটে পড়েছে, এখনও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা প্রায় অনিশ্চিত। সরকার লক্ষ লক্ষ ছাত্র সমাজের জীবন থেকে অমূল্য সময় নষ্ট করেছে। এই সময় নষ্টের ক্ষতিপূরণ রাষ্টকে দিতে হবে।
তারা আরও বলেন, মহামারীকালে শিক্ষার্থীদের এই ঘাটতি পুষিয়ে দিতে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করা ছাড়া কোন বিকল্প পথ নেই। এছাড়া উন্নত বিশ্বে মেধা, যোগ্যাতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও ফিটনেসকে মূল্যায়ন করেছে, বয়সকে নয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির মুখপাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন, সংগঠনের সমন্বয়ক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুলতানা আক্তার, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মো. নাসিম প্রমুখ।