বেশি বিপাকে সমন্বিত সাত ব্যাংকে চাকরিপ্রত্যাশীরা

সাত ব্যংকের লোগো
সাত ব্যংকের লোগো  © ফাইল ফটো

গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সমন্বিত সাত ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদের লিখিত পরীক্ষা আয়োজন করতে চেয়েছিল ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি (বিএসসি)। তবে করোনার কারণে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে কর্তৃপক্ষ। সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে বিভিন্ন পদের নিয়োগ পরীক্ষা হলেও দীর্ঘ দেড় বছর ধরে স্থগিত রয়েছে সাত ব্যাংকের পরীক্ষা। ফলে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন এই ব্যাংকগুলোতে চাকরির আবেদন করা প্রার্থীরা।

এদিকে নতুন করে সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বগামী হওয়ায় পরীক্ষা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কবে নাগাদ এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছুই বলতে পারছে না বিএসসি। ফলে বিপাকে পড়েছেন এই ব্যাংকগুলোতে চাকরির স্বপ্ন দেখা প্রার্থীরা।

তথ্যমতে, সমন্বিত সাত ব্যাংকে পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছেন ১ লাখ ৪০ হাজার ১৫৫ জন প্রার্থী। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষার্থীদের একটি অংশের তীব্র বিরোধীতার কারণে পরীক্ষার সাতদিন আগে তা স্থগিত করা হয়। এর পর পরীক্ষা আয়োজনের জন্য সরকারি কর্ম কমিশনের দিকে তাকিয়ে ছিল বিএসসি। গত ১৯ মার্চ ৪ লাখেরও বেশি প্রার্থী নিয়ে ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেয় পিএসসি। তবে সংক্রমণের হার ঊর্ধগামীর কথা বলে পরীক্ষা নেয়নি বিএসসি। ফলে সাত ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে চাকরিপ্রত্যাশীদের অপেক্ষা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।

এদিকে, সমন্বিত সাত ব্যাংকের স্থগিত পরীক্ষা কবে আয়োজন করা হবে সে সম্পর্কে কিছুই বলতে পারছে না বিএসসি। বিএসসির কর্মকর্তারা বলছেন, পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্ণরের উপর নির্ভরশীল। গভর্ণর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সাথে ‘আন অফিসিয়াল’ বৈঠক করে বিষয়টি ঠিক করবেন। মন্ত্রণালয়গুলো থেকে সবুজ সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব হবে না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএসসির সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক আরিফ হোসেন খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এই মুহূর্তে পরীক্ষার বিষয়ে কোনো সুসংবাদ দিতে পারছি না। গত বছরের ডিসেম্বরে আমরা পরীক্ষার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলাম। তবে প্রার্থীদের একটি অংশের বিরোধিতার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। করোনার কারণে এই পরীক্ষা ঠিক কবে অনুষ্ঠিত হবে সেটি বলা যাচ্ছে না।

এদিকে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর ধরে পরীক্ষা স্থগিত থাকায় বিপাকে পড়েছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। ইতোমধ্যে চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেরই সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে। অনেকের বয়স শেষের পথে। এই অবস্থায় চাকরিপ্রার্থীদের বড় একটি অংশ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তারা বলছেন, ৪১তম বিসিএসের মতো বড় একটি পরীক্ষা হয়ে গেলেও মাত্র দেড় লাখ প্রার্থীর পরীক্ষা আয়োজন করতে না পারার বিষয়টি বোধগম্য নয়।

এ প্রসঙ্গে বগুড়া থেকে সাত ব্যাংকে চাকরির প্রস্তুতি নেয়া মো. আবদুল কাদের বলেন, আমার সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা প্রায় শেষ হতে চলেছে। এই অবস্থায় কবে পরীক্ষা হবে সেটিও কেউ বলতে পারছে না। ফলে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েই এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছি।

আরেক চাকরিপ্রার্থী মো. শামীম আহমেদ বলেন, দেশে এই মুহূর্তে করোনা তাণ্ডব চালাচ্ছে। তবে এর মধ্যেও বিভিন্ন ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে পরীক্ষা আয়োজন করা যেতে পারে। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছি। চাকরির বয়সও শেষের দিকে। পরীক্ষা দ্রুত সময়ের মধ্যে না নিতে পারলে আমাদের জন্য বিকল্প ভাবা উচিৎ।

সমন্বিত সাতটি ব্যাংকের নাম ও শূন্য পদের সংখ্যা: সোনালী ব্যাংক লিমিটেড-২৬৪ টি, জনতা ব্যাংক লিমিটেড-১৩৯ টি, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড-২১১ টি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক-১১৩ টি, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন-০৮ টি, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ-৩০ টি, কর্মসংস্থান ব্যাংক-৬ টি, সমন্বিতভাবে এই ৭টি ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মোট ৭৭১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ