ডোপ টেস্টে পজিটিভ হলেই শেষ সব ধরনের চাকরির স্বপ্ন
মাদকসেবন করলে বন্ধ হয়ে যাবে সরকারি চাকরির দরজা। শুধু তাই নয়, ডোপ টেস্টে পজিটিভ রিপোর্ট এলে জেল-জরিমানারও সম্মুখীন হতে হবে। মাদকাসক্তদের জন্য চাকরির সুযোগ বন্ধ করে ডোপ টেস্ট বিধিমালা-২০২১ চূড়ান্ত করা হচ্ছে। তাতে এ ধরনের নিয়ম-নীতি রাখা হচ্ছে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, ডোপ টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ অর্থ হচ্ছে মানবদেহে মাদকদ্রব্যের উপস্থিতি পাওয়া। আর নেগেটিভ অর্থ মাদকের উপস্থিতি নেই। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি অধিদফতরের পরীক্ষাগারে ডোপ টেস্ট করাতে পারবেন।
বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, স্থানীয় সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে নিয়োগে ডোপ টেস্ট হবে। চাকরিরত অবস্থায় কেউ মাদক সেবন করছে বলে সন্দেহ হলে টেস্টের আওতায় আনা যাবে তাকেও। এছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন এবং সরকারি-বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মাদক গ্রহণের সন্দেহ হলে ডোপ টেস্ট করা যাবে।
বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের ক্ষেত্রে এবং আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নেও ডোপ টেস্টের দরকার হবে। এর বাইরেও নির্বাহী আদেশে ডোপ টেস্টের নতুন ক্ষেত্র সরকার নির্ধারণ করতে পারবে।
ডোপ টেস্ট বিধিমালা সংক্রান্ত খসড়া ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্র জানায়, এখন ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের রয়েছে খসড়াটি। পরে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে গেজেট আকারে বিধিমালাটি প্রকাশিত হবে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) এর আলোকে বিধিমালাটি প্রণীত হচ্ছে। এতে ডোপ টেস্ট রিপোর্টের নেগেটিভ ও পজিটিভের সংজ্ঞা, নমুনা সংগ্রহ পদ্ধতি, ধরন, ল্যাবরেটরি এবং জনবল সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
খসড়া অনুযায়ী, ডোপ টেস্টে পজিটিভ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে মাদকাসক্ত ঘোষণা করা যাবে। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের রিপোর্ট পজিটিভ হলে নেওয়া হবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারি আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।
জানা গেছে, ডোপ টেস্টের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। জৈব নমুনা হিসাবে মূত্র, নখ, প্রশ্বাসের বাতাস, রক্ত, ঘাম, মুখের লালা এবং যে কোনো অঙ্গ বা অংশবিশেষ বা তরল সংগ্রহ করা হবে। নমুনার অবশিষ্টাংশ অন্তত ছয় মাস সংরক্ষণ করা হবে। এজন্য ফি নির্ধারণ করবে সরকার।
প্রস্তাবনায় এ বিষয়ে ৯ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটির কথা বলা হয়েছে। কমিটির প্রধান হবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ প্রধান, বিজিবি মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকরাও থাকবেন কমিটিতে।
টেস্টের পদ্ধতি, ল্যাবরেটরি, পরীক্ষা পদ্ধতির মানদণ্ড বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আরেকটি টেকনিক্যাল কমিটি থাকবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) এর যার প্রধান হবেন।