সাড়ে ৪ লাখের পরীক্ষা হলে দেড় লাখের কেন নয়?

বিসিএসের পর ব্যাংকের পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তুলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা
বিসিএসের পর ব্যাংকের পরীক্ষা নেওয়ার দাবি তুলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা  © সংগৃহীত

চলতি বছরের শুরুর দিকে করোনার সংক্রমণ কমে আসলেও বাংলাদেশে ফের বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। করোনার কারণে এক বছরের বেশি সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে রয়েছে। স্থগিত ছিল চাকরির পরীক্ষাও। তবে সম্প্রতি করোনা ঝুঁকির মধ্যেও বেড়েছে চাকরির পরীক্ষাসহ ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন। করোনার সাথে তাল মিলিয়ে কর্মহীনদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিয়োগ পরীক্ষা নিতে চাপ বাড়ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে গত তিনমাসের মধ্যে বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত হলেও পরদিন শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) কর্তৃক আয়োজিত ৪১তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এবার চার লাখ চার হাজার ৫১৯ জন পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তবে এখনো শঙ্কা কাটেনি সমন্বিত সাত ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সমন্বিত সাত ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে লিখিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি (বিএসসি), যা করোনার কারণে স্থগিত করা হয়। ২৮ নভেম্বর পরীক্ষা স্থগিত করে ওই বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বিএসসি। প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৭৭১টি পদে এক লাখ ৪০ হাজার ১৫৫ জন চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দেওয়ার কথা রয়েছে। বিএসসির অধীন ৯ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আরও অন্তত দুই ডজন নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

এখন দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নেওয়া চাকরিপ্রার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন- যেহেতু বিসিএস’র মত বড় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাহলে সাত ব্যাংকের পরীক্ষা হতে বাধা কোথায়? পরীক্ষাদের এ ধরনের অবস্থানের সঙ্গে অবশ্য একমত ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটিও। এর আগে করোনার মধ্যেই একাধিকবার এ নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান।

সাত ব্যাংকের পরীক্ষা নিয়ে চলতি সপ্তাহেই সুসংবাদ মিলতে পারে

চাকরিপ্রার্থী মিজান বলেন, ‘পরীক্ষার্থীদের নানা বাধার মুখেও পিএসসি ৪১তম বিসিএস পরীক্ষা নিয়েছে। ব্যাংকের পরীক্ষাও নিয়ে নেয়া উচিত। আমরা গত বছর থেকে প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছি। পরীক্ষার অনিশ্চয়তা আমাদের পড়াশোনায় মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। অনেক যুবক ইতোমধ্যে হতাশায় ভুগছে।’

আরেক চাকরিপ্রার্থী সুমাইয়া জামান বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি যেহেতু মানা হচ্ছেই না, এতো বিপুল সংখ্যক মানুষ যখন একসাথে মিলিত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরী হচ্ছে, তাহলে সব পরীক্ষাই হোক। শুধু শুধু পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা আমাদের ক্ষতি করছে।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ও বিএসসির সদস্য সচিব আরিফ হোসেন খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘পরীক্ষা না হওয়ায় বেকারদের বড় একটি অংশ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তারা পরীক্ষা দিতে চায়। অনেকে ফোন করে। পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে আমরাও খুব উদগ্রীব। দ্রুতই বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক সংবাদ দিতে পারব বলে আশা করি।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনাকালীন বড় কোনো পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে সরকারী কর্ম কমিশনকে (পিএসসি) অনুসরণ করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে মোতাবেক শিগগিরই এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। বিএসসিও সে ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছে।

সমন্বিত সাতটি ব্যাংকের শূন্য পদের মধ্যে  রয়েছে, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ২৬৪টি, জনতা ব্যাংক লিমিটেড ১৩৯টি, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড ২১১টি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ১১৩টি, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন ৮টি, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ ৩০টি, কর্মসংস্থান ব্যাংক ৬টি। সমন্বিতভাবে এই সাতটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মোট ৭৭১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ