২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৭:২৬

খাতা টেম্পারিং করে চাকরিচ্যুত ভিকারুননিসার সিনিয়র শিক্ষক

  © ফাইল ফটো

স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষার খাতা টেম্পারিং করে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে খাতা টেম্পারিংয়ের প্রমাণ মেলায় রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ইংরেজি বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক ফাতেমা জোহরা হককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। একই অভিযোগে অধ্যক্ষ আগেই অপসারিত হয়েছেন।
 
গত বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) স্কুলের গভর্নিং বডির সভাপতি ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার খলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ফাতেমা জোহরা হককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত শিক্ষক ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশাসনিক পদের নিয়োগ পরীক্ষার এক প্রার্থীর খাতায় টেম্পারিং করে নম্বর বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। অভিভাবক ফোরামের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্ত করে এর প্রমাণ পায় গঠিত কমিটি। এরপর আইনি অন্যান্য ধাপ শেষ করে বৃহস্পতিবার তাকে চূড়ান্তভাবে চাকরিচ্যুত করা হলো।

ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কামরুন নাহার গণমাধ্যমকে বলেন, বৃহস্পতিবার এই শিক্ষককে চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হয়েছে। আর সাবেক অধ্যক্ষ তো শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা। তিনি এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কেউ না। যদি ব্যবস্থা নিতে হয় তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় নেবে।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক পদ না থাকলেও নিজের লোককে অবৈধভাবে নিয়োগ দিতে ভিকারুননিসার সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফওজিয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে তিনি ছলচাতুরির আশ্রয় নেন। সাধারণ শিক্ষকদের বাদ দিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের একাংশকে দিয়ে খাতা মূল্যয়ন করান। সেখানে তিনি দায়িত্ব দেন ফাতেমা জোহরা হককে। অধ্যক্ষের নির্দেশে একজন পরীক্ষার্থীর খাতায় নম্বর বাড়িয়ে দেন ফাতেমা জোহরা। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ হয় এবং নিয়োগ প্রক্রিয়াও বন্ধ হয় ওই সময়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির হস্তক্ষেপে।
 
শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি করে দেয়। কমিটি তদন্তে খাতা মূল্যায়নে ঘষামাজার প্রমাণ পায়। এরপরই মন্ত্রণালয় অধ্যক্ষ ফওজিয়াকে অপসারণ করে।

তদন্তে প্রমাণ মেলে, পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে গিয়ে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করতে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীর ভুল উত্তরের ওপর ঘষামাজা করে সঠিক উত্তর লিখে দেয়া হয়েছে। এতে প্রার্থীর মোট নম্বর বেড়ে যায়।

বোর্ডের ইস্যু করা চিঠিতে বলা হয়, শিক্ষক ফাতেমা জোহরা হক তদন্ত কমিটির কাছে নিজেই খাতায় ভুল উত্তর কেটে শুদ্ধ উত্তর লিখে দিয়ে নম্বর বাড়ানোর দায় স্বীকার করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিনি নৈতিকভাবে এ পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।