অস্তিত্ববিহীন বিশ্ববিদ্যালয়ে জনবল নিয়োগ, চাকরিপ্রার্থীদের সতর্ক করল সরকার
নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে অবস্থিত ‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয়নি সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষক, কর্মকতা ও কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে তাদের নজরে আসে। এরপর এই বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে কোন রকমের কর্মকাণ্ড না করতে চাকরিপ্রার্থীদের সর্তক করা হয়েছে।
আজ বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এই নামে কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ভিত্তিতে কোন রকমের কর্মকাণ্ড না করার জন্য অনুরোধ করা হল। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয় খতিয়ে দেখছে।
এদিকে ইউজিসি বলছে, এই নামে কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্তিত্ব নেই। এটি সরকারের অনুমোদনপ্রাপ্তও নয়।
আজ বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) কমিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অস্তিত্ববিহীন এ প্রতিষ্ঠানটির অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের সহায়তা চেয়েছে ইউজিসি। এ বিষয়ে শিগগিরই একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে ইউজিসি।
ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় নামে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব সম্পর্কে কমিশন অবগত নয়। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় নামক কোন প্রকল্প প্রস্তাবও ইউজিসিতে প্রেরণ করা হয়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়টির উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চ্যান্সেলর (ভারপ্রাপ্ত) পরিচয়দানকারী অধ্যাপক ড. এ বি এম শরিফুজ্জামান শাহ সম্প্রতি প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ও শিক্ষকসহ বিভিন্ন পদে জনবল নেওয়া হবে উল্লেখ করে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দেখানো হয়েছে সংসদ সদস্য (৩২৩ মহিলা আসন) জনাব রাবেয়া আলীমকে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সংবাদ, জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিসহ বিভিন্ন বিষয় ইউজিসি’র দৃষ্টিগোচর হয়েছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকবৃন্দ ও চাকরি প্রত্যাশীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে সর্তক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি। আগ্রহীরা প্রয়োজনে ইউজিসি’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা ও অনুমোদিত প্রোগামের তালিকা অবলোকন করতে পারেন।
উল্লেখ্য, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০’ অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রত্যেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর মেয়াদে ভিসি, প্রো-ভিসি এবং কোষাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেন। কাজেই এসব পদে কোন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাউকে নিয়োগ প্রদান করলে তা হবে সম্পূর্ণ আইন পরিপন্থী। এছাড়া উপাচার্যবিহীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামের প্রদত্ত সাটিফিকেটও অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।