শাহবাগে বড় জমায়েতের ঘোষণা ‘৩৫ চাই’ আন্দোলনকারীদের
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এসময় দাবি মানা না হলে শিগগিরই শাহবাগে বড় জমায়েতের ঘোষণা দেন চাকরিপ্রার্থীরা।
দিনাজপুরের মানববন্ধনে অংশ নেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইমতিয়াজ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবির পক্ষে সারাদেশে জনসমর্থন তৈরি হয়েছে। চাকরিপ্রার্থীরা চান চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করা হোক। অন্যথায় সারাদেশে গণজোয়ার সৃষ্টি করে শিগগিরই শাহবাগে বড় জমায়েত করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন বিভিন্ন থানায় ও জেলায় এ কর্মসূচি পালন করছি। এসব কর্মসূচিতে সাড়াও পাচ্ছি। এভাবে সবাইকে সংগঠিত করে আমরা শাহবাগে বড় আকারে কর্মসূচি পালন করতে চাই।’
বক্তারা বলেন, ‘আমাদের পড়াশোনা শেষ করতেই ২৭/২৮ বছর চলে যাচ্ছে। ফলে চাকরি পাচ্ছি না। এজন্য চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার বিকল্প নেই। আমাদের সবার কথা চিন্তা করে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করা হোক।’
করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছরের শুরু থেকেই সব ধরনের চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তীব্র হতাশায় পড়ে যান চাকরিপ্রার্থীরা। এ অবস্থায় তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার জন্য চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ অথবা ৩৫ বছর করার দাবি তোলেন তারা। তবে সরকার সে পথে না হেটে বয়সের শর্ত কিছু শিথিল করার উদ্যোগ নিয়েছে।
সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, গত ২৫ মার্চ যাদের ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে তাদেরকেও সব ধরনের সরকারি চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেয়া হবে। পাঁচ মাসের জন্য তাদেরকে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। করোনার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তবে এটি চাকরিপ্রার্থীদের খুব সামান্য একটি অংশ লাভবান হবেন বলে তারা জানিয়েছেন।
তবে চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, করোনার প্রকোপ শুরুর পর চলতি বছরের শুরুতেই সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ কমতে শুরু করে। আর মার্চ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বন্ধের পাশাপাশি গণহারে ছাটাই শুরু হয়। এতে সব বয়সের চাকরিজীবী ও চাকরিপ্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কিন্তু এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে শুধু চাকরিপ্রার্থীদের একটি অংশ লাভবান হবেন বলে তারা মনে করছেন। তাদের বক্তব্য, চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে যাদের বয়স করোনাকালে ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে বা কাছাকাছি রয়েছে তারাই শুধু সুবিধা পাবেন। সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সও ত্রিশ বছর। অথচ সব বয়সী চাকরিপ্রার্থীই এ সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে দাবি করছেন তারা।
এজন্য সবার কথা বিবেচনা করে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ বা ৩৫ বছর করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, করোনাকালে সবাই অন্তত এক বছরের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অন্তত এক বছর সময় চলে গেছে, যা আর কেউ ফিরে পাবে না। এজন্য একাংশকে সুবিধা না দিয়ে সবার কথা বিবেচনা করে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ কিংবা ৩৫ বছর করার দাবি জানিয়েছেন তারা। বয়স না বাড়ানো হলে বেকারত্ব বাড়বেও দাবি চাকরিপ্রার্থীদের।