এবার আসছে ‘চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ চাই’

  © ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি অনেক দিনের। এ নিয়ে আন্দোলনও হয়েছে। কিন্তু সরকার তা মেনে নেয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে করোনা মহামারিতে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা কত হবে, তা নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। শুধু চাকরি প্রত্যাশীরা নয়, সরকারের নীতিনির্ধারকরাও এ নিয়ে মুখ খুলছেন। তারা বলছেন, চাকরির প্রবেশ ও অবসরের বয়স পুর্নবিন্যাসের সময় এসেছে।

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়া-না বাড়া নিয়ে যখন এই আলোচনা, ঠিক তখনই ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা চাকরিপ্রত্যাশীরা ‘চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ চাই’ নামে নতুন এক প্ল্যাটফর্মের ঘোষাণা দিল। চলতি মাসের শুরুর দিকে গঠিত এর আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়েছে। শিগগিরই তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে কমিটির আহ্বায়ক ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহফুজুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, করোনার কারণে আমরা ৬ হারিয়েছে। সামনে আরও কয় মাস যাবে তা বলা যাচ্ছে না। এসময় সব ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। আমরা মনে করি, চাকরির বাজার গতিশীল হতে আরও ২ বছর লেগে যাবে। সে বিবেচনায় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ করার দাবি জানাচ্ছি।

কোন কর্মসূচি ঘোষণা হয়েছে কিনা-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে এটি নির্ধারণ করা হবে। তবে প্রথমে সরকারের জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এরপর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষাণা করা হবে।

জানা গেছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষের উপহার এবং করােনায় হারানাে বয়সের প্রণােদনা হিসেবে সরকারের কাছে চাকুরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ বছর করার দাবিটি তুলে ধরা হবে। এজন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের স্মারকলিপি দেওয়ার পাশাপাশি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন পালন করা হবে। পরবর্তীতে সরকারের অবস্থান বুঝে তারা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে। তবে বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি এবং সীমিত পরিসরে রাজধানীতে মানববন্ধন করার পরিকল্পনা রয়েছে ৩২ চাই আন্দোলনকারীদের। 

আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবেল আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গত সপ্তাহে আমাদের ১১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে এখনও কোন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়নি। কী কর্মসূচি দেয়া যায়, আগামী শুক্রবার বসে তা সিদ্ধান্ত নেব।

করোনা পরিস্থিতি, দেশের গড় আয়ু বৃদ্ধি, দেশে চাকরিতে অবসরের বয়স বাড়ানো ও পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে চাকরিতে বয়স বেড়েছে প্রভৃতি যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, চাকরির বয়স ৩২ হওয়াটা আমাদের প্রাপ্য।

নতুন এই প্ল্যাটফর্মে যারা রয়েছেন: আহবায়ক মাহফুজুল ইসলাম (কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়), সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক মারুফ হােসাইন (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), সদস্য সচিব রুবেল আহমেদ (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়), যুগ্ম-আহবায়ক নাজমুল হােসাইন (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), যুগ্ম-আহবায়ক মােঃ সুমন খান (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়), যুগ্ম-আহবায়ক মােঃ আনােয়ার সাকিন (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), যুগ্ম-আহবায়ক কে এম ইফতেখারুল আলম (শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), যুগ্ম-আহবায়ক শারমিন সুলতানা তরি (ইডেন মহিলা কলেজ), যুগ্ম-আহবায়ক মােঃ মনিরুজ্জামান (ঢাকা কলেজ), যুগ্ম-আহবায়ক রাসেল মাহমুদ (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), যুগ্ম-আহবায়ক মােঃ সােহেল (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।

এদিকে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের বয়সসীমা পুর্নবিন্যাসের সময় এসেছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি মনে করেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩৫ কিংবা ৪০ বছর করা যেতে পারে। এ ছাড়া অবসরের বয়সও ৬৫ করা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

সম্প্রতি ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয় চিন্তা করতে হয়। উন্নত দেশে বাংলাদেশের মতো ক্যাডার, বয়স বা নিয়মকানুন নেই। ব্রিটিশরা যে মানসিকতা থেকে এটা করেছিল, তা আর খাটে না। আমাদের বয়স, স্বাধীনতা, সক্ষমতা, বিদ্যাবুদ্ধি বেড়েছে। সুতরাং এটার পুনর্বিন্যাস প্রয়োজন।


সর্বশেষ সংবাদ